উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। শনিবার (১৪ মে) দেশটির নেতা কিম জং উন বলেছেন, করোনার বিস্তার তার দেশকে ‘মহাবিপর্যয়ের’ মধ্যে ফেলেছে। এ সময় ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে উঠতে সর্বাত্মক লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স। খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নতুন করে ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো করোনার প্রাদুর্ভাবের কথা জানায় দেশটি। এরপরই পুরো দেশে লকডাউন জারি করা হয়। বিশ্বব্যাপী মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে গত দুই বছর ধরে উত্তর কোরিয়ায় কোনো কোভিড রোগীর সংবাদ পাওয়া যায়নি। অবশ্য সেখানে করোনা টেস্ট হয়েছিল কি না বা এ নিয়ে কোনো প্রচারও প্রকাশ পায়নি। এদিন নতুন করে আরও ২ লাখ ৭৪ হাজার ৪ হাজার ৪৪০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির জরুরি বৈঠকে কিমের বক্তব্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘আমরা যদি মহামারি নীতি বাস্তবায়নে মনোযোগ না হারাই এবং দল ও জনগণের একক ঐক্যের ভিত্তিতে শক্তিশালী সংগঠন শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখি। পাশাপাশি আমাদের মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইকে শক্তিশালী করি, তাহলে আমরা সংকট আরও দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারবো।’
আরও পড়ুন: যেকোনো সময় পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ায় গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা সংক্রমণের কথা স্বীকার করে। এর একদিন পর বৃহস্পতিবার থেকে দেশটিতে লকডাউন জারি করা হয়। গত শুক্রবার করোনায় দেশটিকে ৬ জন মারা যান। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মারা গেলেন ২৭ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ৪৪০ জন। দেশটিতে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উনকে এক টিভি ভাষণে প্রথমবারের মতো মাস্ক পরতে দেখা যায়। কিম জং উন করোনার এ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করছেন। তবে উত্তর কোরিয়ার সরকারি ভাষ্যমতে, বুধবার প্রথমবারের মতো কোভিড রোগী শনাক্তের কথা বলা হলেও দেশটিতে অনেক দিন থেকেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। নিজেদের জনগণকে উত্তর কোরিয়া কোনো কোভিড-১৯ টিকা দেয়নি। চীনের তৈরি সিনোভ্যাক টিকা এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার ডোজ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলেও দেশটি উভয়ই প্রত্যাখ্যান করেছে।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পরই নিজেদের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয় উত্তর কোরিয়া। এ পদক্ষেপের মাধ্যমেই দেশে ভাইরাসটির প্রবেশ বন্ধ করতে চেয়েছেন তারা। উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী চীনেই প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় আর দেশটি এখন ওমিক্রন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য সংগ্রাম করছে। উত্তর কোরিয়ার অপর প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়াও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখেছে।
Facebook Comments