সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার সঙ্গে জড়িত মাদককাণ্ডে এনসিবির হাতে গ্রেফতার হওয়া রিয়া চক্রবর্তী ও তার ভাই শৌভিকসহ ৬ জনের জামিনের আবেদন খারিজ করলো সেশন কোর্ট। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিশেষ এডিপিএস আদালতে শুনানি হয়েছিল রিয়াসহ বাকি ছয়জনের জামিনের জন্য। রায় সংরক্ষিত রেখেছিল আদালত। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় সেশন কোর্ট জানিয়ে দিল রিয়া চক্রবর্তী, শৌভিক চক্রবর্তী, আবদুল বাসিত, জায়েদ ভিলাট্রা, দীপেশ সাওয়ান্ত ও স্যামুয়েল মিরান্ডার জামিন হচ্ছে না। কী কারণে খারিজ হয়েছে এই আবেদন, তা নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি আদালত। এই রায়ের জেরে আপাতত বাইকুল্লা জেলেই থাকতে হচ্ছে রিয়াকে। মানে, জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না অভিনেত্রী।
সেশন কোর্টে জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ায় মুম্বাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে যাচ্ছেন রিয়া ও শৌভিকের আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে। উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বাকি চার অভিযুক্তের আইনজীবীও। মানেসিন্ধে জানান, রায়ের কপি হাতে পেলে আমরা আগামী সপ্তাহে মুম্বাই হাইকোর্টের সামনে জামিনের আবেদন জানাবো।
এনডিপিএস আইনের আওতায় ৮ (সি), ২০ (বি), ২৭ (এ), ২৮, এবং ২৯ নম্বর ধারায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর হাতে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতার করা হয় সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীকে। জামিনের আবদনে সতীশ মানেসিন্ধে জানান তার মক্কেল ‘নির্দোষ’ এবং ২৮ বছরের এই অভিনেত্রীকে এই মামলায় অযথায় ফাঁসানো হচ্ছে। রিয়া কোনওরকম অপরাধ করেননি। ’
জামিনের আবেদনে রিয়া বলেছেন, অপরাধমূলক স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য তাকে জোর করা হয়েছিল এনসিবির তরফে এবং ৮ সেপ্টেম্বর দাখিল করা নিজের জামিনের আবেদনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ধরনের সমস্ত অপরাধমূলক স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেন আবেদনকারী রিয়া।
কিন্তু আদালতে রিয়াসহ গ্রেফতার বাকি পাঁচ জনের জামিনের বিরোধীতা করে এনসিবি। বলা হয়, তারা প্রভাবশালী, তারা বাইরে এলে তদন্ত ব্যাহত হবে। রিয়ার বিরুদ্ধে এনডিপিএস আইনের ২৭ (এ) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় দোষ প্রমাণে কমপক্ষে ১০ বছর, এবং সর্বাধিক ২০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।
রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে রিয়ার উপর এই এনডিপিএস আইনের এই ধারা যোগ করার বিরোধিতা করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, এই মামলায় খুব অল্প পরিমাণ মাদক জড়িত রয়েছে। যদিও মানেসিন্ধের এই দলিল কাজে আসেনি। এনসিবির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় রিয়া চক্রবর্তীকে মাদক সেবনের জন্য গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি নিজের জবানবন্দিতে সুশান্তের জন্য মাদক সংগ্রহ করার কথা মেনে নিয়েছেন। তাই তার জন্য ২৭ (এ) ধারা প্রযোজ্য। সেক্ষেত্রে কোনওভাবেই তাকে জামিন দেওয়া হতে পারে না।
আদালত রিয়ার ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত মঞ্জুর করা করেছে। তাই ২২ সেপ্টেম্বর বাইকুল্লা জেলই হতে চলেছে রিয়া চক্রবর্তীর ঠিকানা।
Facebook Comments