শিক্ষার্থীর বিক্ষোভের মুখে গ্রেপ্তার মুন্সীগঞ্জের শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল জামিন পাননি। মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ তার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন সপ্তাহ আগে সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল বিজ্ঞান পড়ানোর সময় প্রসঙ্গক্রমে ধর্ম নিয়ে কথা বলেন।
ঘটনার পর হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান শরীফ। মনিরুজ্জামান জানান, গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির পঞ্চম ঘণ্টায় সাধারণ বিজ্ঞানের ক্লাস ছিল। মানবিক ও বাণিজ্য শাখার ক্লাসটি নিচ্ছিলেন শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল। ‘‘সেদিন হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল ওই ক্লাসে ধর্ম নিয়ে আলোচনা করেন, যা কয়েকজন শিক্ষার্থী রেকর্ড করে।’’ তিনি জানান, পরে ধর্ম নিয়ে ‘আপত্তিকর’ কথা বলার অভিযোগ তুলে কিছু শিক্ষার্থী এলাকায় হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে।
ওই অবস্থায় এই শিক্ষককে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়। পরে মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ঘটনার দুদিন পর (২২ মার্চ) ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী (ইলেক্ট্রেশিয়ান) মো. আসাদ বাদী হয়ে হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরদিন ২৩ মার্চ তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে জেল হাজতে পাঠানো হয়। আবু বক্কর সিদ্দিক আরও জানান, গত ২৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে প্রথমে তার জামিন আবেদন করা হলে তা নাকচ হয়ে যায়। সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আমজাদ হোসেনের আদালতে হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলের পক্ষে আবার করা জামিন আবেদনও নাকচ হয়ে যায়। আগামী ১০ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় হৃদয় মন্ডলের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করা ও ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন একই স্কুলের অফিস সহকারী মো. আসাদ মিয়াঁ। এরপর শিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Facebook Comments