বিস্কুট নয়। মুচমুচে সন্ধ্যায় এক মুঠো মুড়ি হয়ে যাক। তবেই চায়ের সঙ্গে টা এর সংজ্ঞা পালটাবে। এখনও, অতিথি আপ্যায়ণ থেকে অবসর, সবেতেই গরম গরম চায়ের বিশেষ বন্ধুর তালিকায় রয়েছে রকমারি বিস্কুট। আর তাতেই সমস্যা বাড়ছে। । কারণ, বিস্কুট মানেই ময়দা মিষ্টির সংমিশ্রণ। শুধু চা নয়। দুধ বা টিফিন ব্রেকেও বিস্কুট হয়ে ওঠে সবে ধন নীলমণি। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে মুড়ি, মুড়কি, চিড়ে, খই।
আগেকার দিনে দুধের সঙ্গে মুড়ি, খই, চিড়ে খাওয়ার একটা চল ছিল। এখন সেই চলে কিছুটা টান পড়েছে যদিও। তবে তুলনামুলকভাবে বিস্কুটের থেকে মুড়ি বহুগুনে ভাল স্বাস্থের জন্য। প্রতি ১০০ গ্রাম মুড়িতে ক্যালরি থাকে ৪০২ গ্রামের মত। এছাড়াও মুড়ি হল ভরপুর আয়রন সমৃদ্ধ, কোলেস্টেরল বিহীন শর্করা জাতীয় খাবার। এমনকি মুড়িতে সোডিয়ামের পরিমান এতটাই কম থাকে যার ফলে হাই ব্লাড প্রেশারের রোগীও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন মুড়ি। পেটের গোলমাল হলে অনেকেই জল মুড়ি খেয়ে থাকেন। এছাড়া প্রাথমিকভাবে অ্যাসিডিটির সমস্যাতে শুকনো মুড়ি বেশ উপকারী। যাদের শারীরিক ধাঁচ একটু স্থূলতার দিকে তাঁদের জন্য মুড়িই সব থেকে ভাল। সে চায়ের সঙ্গে হোক বা অন্য কিছু সহযোগে। কারণ, বিস্কুট বা কুকিজ জাতীয় খাবারে ময়দা মাখন চিনির সংমিশ্রণ থাকে যা ফ্যাট বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে মুড়ি শুধুমাত্র ধান থেকে আসা একটি হালকা শুকনো খাবার।
এখনও গ্রামেগঞ্জে সান্ধ্যকালিন খাবারের তালিকায় মুড়ি থাকে। সারাদিন খাটাখাটনির পর এক ঝুড়ি মুড়ি নিয়ে বসে যায় অনেকেই। সেখানে দাঁড়িয়ে শহুরে জীবনযাত্রায় মুড়ির আনাগোনা খুবই কম। স্ট্যাটাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাবারের ধরণও পাল্টে গেছে অনেক। ফলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে খাবার থেকে। চিড়ে, মুড়ি, খইয়ের গল্প ভুলতে বসেছে বাচ্চারা এমনকি বড়রাও। ফাস্ট ফুড খাবার বা বিস্কুট, কুকিজ থেকে খানিকটা সরে এসে মুড়ি, চিড়ে, খইয়ে যদি দৃষ্টিপাত করা যায় তবে স্বাস্থ্য বহুগুণে ভাল থাকবে বলে আশা করা যায়।
Photo – Susmita Saha
Facebook Comments