দুপুরে খাওয়ার পর একটু ঝিমুনি আসা খুব স্বাভাবিক। আর সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব হওয়া? এটাও স্বাভাবিক। রাতে ঠিক করে না ঘুমিয়ে নিলে বা যেকোনো কারণে অফিসে তন্দ্রাভাব কাজ করতেই পারে। সাধারণত, এমন কিছু হলে আমরা ঘুম তাড়াতে চা বা কফি পান করি। কিন্তু আপনার যদি কফি বা চা পানে কোনো বাধানিষেধ থাকে তাহলে? চলুন, আজ তাই জেনে নেওয়া যাক কফি বা চা ছাড়াই অফিসে ঘুম দূর করার সহজ কিছু উপায়।
১। সঠিক সময়ে, সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করুন –
অনেকেই সকালে তাড়াহুড়ায় খাবার খেতে ভুলে যান। ফলে সারাদিন শরীর চলার মতো যথেষ্ট শক্তি পায় না। অন্যদিকে, ঠিক পরিমাণ পুষ্টি শরীর না পেলে সেক্ষেত্রেও শরীরে সুগারের পরিমাণ কমে যায়। আর শরীর যদি চলার মতো শক্তি না পায়, তাহলে তো দূর্বল ও তদ্রাভাব লাগবেই। তাই, চেষ্টা করুন সঠিক সময়ে ও সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করার।
২। কিছুক্ষণ পরপর বিরতি নিন –
গবেষণায় জানা যায় যে, প্রাপ্তবয়স্ক কোনো মানুষ কাজের কিছুক্ষণ পরপর ১০ মিনিটের একটি বিরতি নিলে তাতে করে হৃদপিণ্ডের গতি বাড়ে এবং শরীর আর চনমনে হয়ে ওঠে। ফলে, কাজের গতিও বেড়ে যায়।
৩। মানুষের সাথে কথা বলুন –
সারাক্ষণ এক চেয়ারে, একইভাবে বসে না থেকে চারপাশের সহকর্মীদের সাথে কথা বলুন। কথা বলার বিষয় নানারকম হতে পারে। এতে করে আপনি মানসিকভাবে কাজের নতুন গতি পাবেন। ঘুমের জন্য যে আবহ প্রয়োজন সেটা আর তৈরি হবে না।
ঘুম
৪। রোদে গিয়ে বসুন –
চিকিৎসকদের মতে, মানুষ রোদে গিয়ে বসলে তার শরীরে সেরোটোনিন নিঃসরিত হয়। এই হরমোনটি মানুষের মানসিক শক্তিকে অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। তাই, ঘুমের ভাব আসলে কিছুক্ষণ রোদে গিয়ে বসে থাকুন। এতে করে আপনার ঘুম কেটে যাবে।
৫।গভীর শ্বাস নিন –
বড় শ্বাস নিলে শরীরের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে। যেটি রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে এবং শরীরের শক্তিকেও অনেক পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়।
৬। প্রচুর পানি পান করুন –
সাধারণত, আমাদের শরীরের কোষগুলোর পানি প্রয়োজন হয়। পানির পরিমাণ কমে গেলে কোষের আকার ছোট হয়ে যায় এবং শরীরে অবসাদ কাজ করে। ঘুমের ভাব কাজ করে। এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পানি পান করুন।
৭। কম্পিউটার থেকে ছুটি নিন –
কিছু সময় পরপর কম্পিউটার থেকে নিজের চোখ কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে নিন। কম্পিউটারে একটানা কাজ করলে আমাদের চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং ঘুম চলে আসে। এজন্য কিছু সময় কম্পিউটার থেকে বিরতি নিন।
৮।নির্দিষ্ট সময় পর ‘পাওয়ার স্ন্যাক’ খান –
দিনের প্রতি চারঘণ্টা পর নিজেকে খানিকটা পুরস্কৃত করুন। হালকা নাশতা খেয়ে নিন। সেটা হতে পারে এক টুকরো চকোলেট বা যেকোনো মিষ্টি খাবার। এতে করে আপনার শরীর নতুন করে কাজ করার শক্তি পাবে। শরীরে সুগারের পরিমাণ বাড়লে ঘুমের পরিমাণ কমে যাবে।
৯। পরিবেশ বদলে নিন–
এমনটা হতেই পারে যে, আপনার চারপাশের পরিবেশ, আপনার বসার অবস্থান এই সবকিছু আপনাকে ঘুমিয়ে পড়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই তন্দ্রাভাব থেকে দূরে থাকতে চেয়ার এবং চারপাশের পরিবেশ একটু বদলে নিন।
১০। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান–
রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমিয়ে নিলে পরের দিন অফিসে ঘুম বারবার চলে আসতেই পারে। তাই, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর চেষ্টা করুন। অন্য আর কোনো কৌশলের চাইতে এই কাজটিই আপনাকে ঘুম তাড়াতে এবং অফিসে সারাক্ষণ কর্মঠ থাকতে সাহায্য করবে।
তাহলে? পরেরবার অফিসে তন্দ্রাভাব কাজ করলে কফি খাবেন, নাকি এই কৌশলগুলো ব্যবহার করে দেখবেন?
মূল লেখক : ডক্টর ওথেলো ডেভ, পার্কওয়ে হসপিটাল।
Facebook Comments