অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরাত জাহান প্রায়ই বিতর্কে থাকেন। এখন তৃণমূল সাংসদ ‘নিখোঁজ’। বসিরহাট লোকসভা এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় সাঁটানো হয়েছে নুসরাত জাহানের নিখোঁজ হওয়ার পোস্টার। এতে লেখা হয়েছে, ‘এমপি নুসরাত জাহান নিখোঁজ। আমি খুঁজে বের করতে চাই ‘ওয়ার্কার্স অফ টিমসি’ এর সৌজন্যে।” বসিরহাট লোকসভা এলাকায় এই ধরনের পোস্টার পাওয়া যাওয়ার পরে রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র হয়েছে।
নুসরত জাহান বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ এবং সম্প্রতি তার স্বামী নিখিল জৈনের সাথে তার বিচ্ছেদ এবং তারপরে একটি সন্তানের জন্মের জন্য শিরোনামে ছিলেন। এখন বসিরহাট লোকসভা এলাকায় ‘নিখোঁজ’-এর পোস্টার পরে এলাকায় সাংসদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিনেত্রী সাংসদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান।
স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান বলছেন, সাধারণ মানুষের ভোটে জেতার পর মানুষ আশা করে যে সাংসদ তাদের এলাকায় এসে তাদের সমস্যার সমাধান করবেন, কিন্তু মানুষ শুধু সাংসদকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পায়। মনে হচ্ছে রাতের আঁধারে কেউ পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি যুব মোর্চার বসিরহাট সভাপতি পলাশ সরকার বলেন, ‘তৃণমূল সাংসদদের ফিল্মের পর্দায় দেখা যাচ্ছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুক এবং ট্যুইটারে উপস্থিত হন। তারা সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে না। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসেও এর অস্তিত্ব হারিয়েছে।”
চম্পাতলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হুমায়ুন রাজা চৌধুরী বলেন, “আমি এই পোস্টার সম্পর্কে জানতে পেরেই আমাকে পোস্টারটি সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে হাজী নূরুল সাহাব এমপি হন। তিনি মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছেন। একই সঙ্গে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মানুষ নুসরাতকে এভাবে দেখে না। মানুষের মনে ক্ষোভ থাকতে পারে। আমরা দলকে এটা জানাব।’
পোস্টারে তৃণমূল কর্মীদের উল্লেখ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘পার্টি কর্মীরা সাধারণ মানুষ। তারা ভোট দিয়ে প্রধান, এমপি, বিধায়ক নির্বাচিত করে। নুসরাত জাহানকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এতে মানুষ রাগান্বিত হতে পারে। এমনকি তিনি কোনও অনুষ্ঠানেও যোগ দেন না।’
সিপিআইএম উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদস্য ইমতিয়াজ হুসেন বলেন, ‘নুসরাত জাহান যখন প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন আমরা বলেছিলাম যে এই প্রার্থীর কোনও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। সমাজে তাদের কোনও অবদান নেই। সমাজের মানুষের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই। জিতলে বসিরহাটের জন্য কী করবেন? আমি ২০১৯ সালে এই প্রশ্নটি উত্থাপন করেছি। আজ ২০২২ সালে এটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে।”
Facebook Comments