ভোট-পরবর্তী বাংলায় গণতন্ত্র রক্ষিত হচ্ছে না। রবিবার দিল্লি যাত্রার পর থেকে এই কথা একাধিকবার শোনা গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরেও রাজ্যের ৩৫৬ ধারা জারি করার পক্ষে সওয়াল করতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে। এরপর আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পরেও সেই বাংলায় গণতন্ত্র রক্ষিত না হওয়ার প্রসঙ্গেই মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে গিয়ে সাক্ষাত্ করেন শুভেন্দু অধিকারী। টানা ৪৫ মিনিট ধরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন শুভেন্দু।গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও সাক্ষাত্ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর অনুযায়ীবিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গেও সাক্ষাত্ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা সহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।
তবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর এই বৈঠক সম্পর্কে আগে থেকে কিছুই জানতেন না রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সংবাদমাধ্যমের কাছে সে কথা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন। শুভেন্দুর দিল্লি সফর নিয়ে দিলীপকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,’শুভেন্দু কেন দিল্লি গেছেন তার দিল্লির নেতারাই বলতে পারবেন।’ তবে রাজনৈতিক মহলের অনুমান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভোট-পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ উঠে আসতে পারে। যদিও গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, এটি একান্তই সৌজন্য সাক্ষাত্কার। বিরোধী দলনেতা হিসেবে কীভাবে কাজ করবেন, দলের কর্মসূচী কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, এ বিষয়ে পরামর্শ চাইবেন। এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার সকালে দিল্লিতে আগমন করা বিজেপির তিন সংসদ সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংহ ও নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন শুভেন্দু। সৌমিত্র খাঁ-এর দিল্লির বাড়িতেই বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন তাঁরা। সূত্রের খবর অনুযায়ী এদিন বিকেলে ফের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী।
গতকাল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পর শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন,৩৫৬ যে যে কারণে লাগানো হয়, তার থেকেও মারাত্মক অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের। তাঁর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তৃণমূলের বরিষ্ঠ নেতা সৌগত রায় বলেন, হেরে মাথাটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গতকাল বলেছিলেন,আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। উল্লেখ্য,বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর বারংবার ভোট-পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি করার পক্ষে সুর চড়িয়ে এসেছে বিজেপি। বিজেপি সংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, ‘বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি না করলে মানুষ বাঁচবে না।’ যদিও এর পাল্টা জবাব দিয়ে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘বিজেপি সংবিধান ধ্বংস করে দিচ্ছে…জনমতকে শ্রদ্ধা করতে জানে না। সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বললে, মানুষ ক্ষমা করবে না।’ অন্যদিকে, দিল্লি থেকে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি,’কেন্দ্রে একটা শক্তিশালী সরকার আছে। ওয়েট অ্যান্ড সি।’
Facebook Comments