পাঞ্জাবে সরকার গড়তে চলেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। ফলাফলে কৃষক আন্দোলনের ছায়া। দিল্লির পর এবার পাঞ্জাবেও সরকার গঠনের রাস্তায় আম আদমি পার্টি। কংগ্রেস সরকারকে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ করে দিচ্ছে কেজরিওয়ালের দল। ভারতীয় রাজনীতির বর্তমান সমীকরণে আরো শক্তিশালী জায়গায় পৌঁছে গেলেন কেজরিওয়াল। ফলাফলের প্রাথমিক ট্রেন্ডে পরিষ্কার, পাঞ্জাবে সরকার গড়তে চলেছে আম আদমি পার্টি। ১১৭ আসনের পাঞ্জাব বিধানসভায় সরকার গঠনের ম্যাজিক ফিগার ৫৯টি আসন। সকাল ১১টা পর্যন্ত ফলাফলের ট্রেন্ডে অনেক এগিয়ে আম আদমি পার্টি (আপ)। এগিয়ে আছে ৮৯টি আসনে।
গতবারের শাসকদল কংগ্রেস এগিয়ে আছে মাত্র ১৩টি আসনে। আর বিজেপি এগিয়ে আছে ৫টি আসনে। পাঞ্জাবের অকালি দল এগিয়ে ৯টি আসনে। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের জোটসঙ্গী ছিল এই অকালি দল। তবে কৃষক আন্দোলনের সময় তারা বিজেপির জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসে। ২০২০ সালে কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন সংশোধন নিয়ে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন পাঞ্জাবের কৃষকরা। প্রায় এক বছর ধরে সেই আন্দোলন চলে। এর মধ্যে পাঞ্জাবের রাজনীতিতে বেশ কিছু ঐতিহাসিক পটপরিবর্তন হয়।
কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কংগ্রেস ছেড়ে তিনি নতুন দল তৈরি করেন এবং বিজেপির কাছাকাছি যান। অন্যদিকে, কংগ্রেসের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন চরণজিত্ সিং চান্নি। কংগ্রেস সভাপতি হন নভজত্ সিং সিধু।
অমরিন্দর সিং দল ছাড়ায় কংগ্রেসের ভিতর ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়। আর সেই সুযোগই কাজে লাগান কেজরিওয়ালের আপ। একাধারে বিজেপি এবং কংগ্রেস বিরোধিতার রাস্তা নিয়ে প্রতিষ্ঠানবিরোধী মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টা করে আপ। ভোটের প্রাথমিক ফলাফলে আপের সেই পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।
শেষপর্যন্ত পাঞ্জাবে আপ সরকার গড়লে তা হবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ঐতিহাসিক জয়। এই প্রথম দিল্লির বাইরে কোথাও সরকার গড়ার সুযোগ পাবেন কেজরিওয়াল। বিজেপি-বিরোধী কেন্দ্রীয় রাজনীতির সমীকরণের গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠবেন তিনি। দিল্লি আসলে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যেখানে বিধানসভা আছে।
ফলে এখানে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা খুবই সীমীত। কিন্তু পাঞ্জাব পূর্ণ রাজ্য। পাকিস্তান সীমান্তে থাকার কারণে তার গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে একটি পূর্ণ রাজ্য হাতে পেয়ে তা কীভাবে আপ চালায়, তার উপর কেজরিওয়ালের ভবিষ্যত্ বিস্তারের পরিকল্পনার সাফল্য নির্ভর করবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পাঞ্জাবের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এবং চান্নি দুইজনেই নিজেদের কেন্দ্রে পিছিয়ে আছেন। তিন নম্বর স্থানে আছেন পাঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি সিধুও। প্রাথমিক ফলাফলে গতবারের চেয়ে ৬০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে আছে আপ।
(পিটিআই)
Facebook Comments