‘ইন্ডিয়া’র প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের নাম প্রস্তাব করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাত্পর্যপূর্ণভাবে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেস বিরোধী হিসাবে পরিচিত আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন।
মঙ্গলবার দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র চতুর্থ পূর্ণাঙ্গ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জোটের বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতানেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৈঠকে আসন্ন লোকসভা ভোটে বিভিন্ন রাজ্যে জোটের দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি ছিল মূল আলোচ্য বিষয়। এইদিনের বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গেকে বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসাবে প্রস্তাব করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপ প্রধান কেজরিওয়াল সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন। যদিও জোট-বৈঠকে অন্যান্য দলগুলি এই বিষয়ে আগ্রহ না দেখানোয় আলোচনা বিশেষ হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবে, খাড়গে বলেন যে, ‘আমাদের নির্বাচনে জয়ের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত্।’ তিনি বলেন, ‘সবাই একযোগে কাজ করবে এবং আমাদের মানুষ যে রাজ্যে আছে, সেখানে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া করবে। যদি বোঝাপড়া না করা যায় তাহলে ‘ইন্ডিয়া’ (আইএনডিআইএ) জোটের লোকেরা সিদ্ধান্ত নেবে। সাংসদ না হলে প্রধানমন্ত্রীর কথায় কী লাভ? তাই আমাদের চেষ্টা করতে হবে আগে বিজয়ী হতে।
বৈঠকে উপস্থিত রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) প্রধান জয়ন্ত চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাব সম্পর্কে বলেছেন যে, ‘আমি এটি নিশ্চিত করতে পারব না। এমতাবস্থায়, এই মুহূর্তে আমি এই বিষয়ে হ্যাঁ বা না বলছি না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাব চমকে দেওয়ার মত। বাংলায় তৃণমূল ও কংগ্রেসকে চির প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। এর ঝলক দেখা গেছে দুই দলের নেতৃত্বের মধ্যে। শুধু তাই নয়, এই প্রস্তাবে স্পষ্ট যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে দেখছেন না।
নয়াদিল্লীর অশোক হোটেলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং জেডিইউ থেকে রাজীব রঞ্জন সিং, তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় , ডিএমকে থেকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন, শিবসেনা (ইউবিটি) থেকে উদ্ধব ঠাকরে এবং আদিত্য ঠাকরে, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) থেকে মেহবুবা মুফতি, আপনা দল (কে) থেকে কৃষ্ণা প্যাটেল ও পল্লবী প্যাটেল এবং আরও অনেক নেতা-নেত্রী অংশগ্রহণ করেন।
কয়টি বৈঠক হয়েছে?
এর আগে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া’র তিনটি বৈঠক হয়েছে। ২৩ জুন বিহারের পাটনায় এর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় বৈঠকটি ১৭ এবং ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়া ৩১ ও ১ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ে তৃতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
Facebook Comments