করোনা আবহে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভার্চ্যুয়াল সভা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভাষণের শুরুতেই বাংলার মাটিকে প্রণাম জানান অমিত শাহ। এরপর একে একে মনীষীদের নাম উল্লেখ করেন অমিত শাহ। তাঁর মুখে যেমন রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, সূর্য সেন, বঙ্কিমচন্দ্রের নাম এসেছে, ঠিক তেমনই হরিচাঁদ গুরুচাঁদ, শ্যামাপ্রসাদের নামও এসেছে। অমিত শাহ অভিযোগ করেছেন, দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি রাজনৈতিক হিংসা পশ্চিমবঙ্গে। এই হিংসায় ১০০-র বেশি বিজেপি কর্মী সমর্থক খুন হয়েছেন। দলের যেসব কর্মী সমর্থক বলিদান দিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেছেন, কর্মীদের বলিদানকে শ্রদ্ধা জানাই।
গত ছয় বছরে মোদী সরকারের সাফল্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে অমিত শাহ প্রথমেই জনধন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এই ধরনের ৫১ কোটি অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনি আয়ুষ্মাণ ভারত প্রকল্প, কৃষকদের জন্য প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি তিন তালাক, ৩৭০ ধারা বিলোপ, সিএএ-র কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তার তালিকায় ছিল পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পরে আকাশপথে ভারতের পাল্টা হামলার কথা।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, কালই সাংবাদিক সম্মেলন করে ১০ বছরের সাফল্যের খতিয়ান দিন। কটাক্ষ করে তিনি বলেন ভুল করে বোমা বানানোর হিসেব দিয়ে ফেলবেন না। বেকারত্বের হিসেব দিয়ে ফেলবেন না। তিনি বলেছেন, সিএএ রাজনীতি মমতাকেই শরণার্থী করে দেবে। এই সংকটের সময়েও বাংলায় হিংসা হচ্ছে। করোনা ও আমফানের পরেও তৃণমূলের দুর্নীতি কমেনি। পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনকে দিদি করোনা এক্সপ্রেস বলেছেন। ওই ট্রেনে করেই তাঁকে রাজ্যের বাইরে চলে যেতে হবে। মমতাদিদি চেষ্টা করেও বাংলায় পরিবর্তন ঠেকাতে পারবেন না।
অমিত শাহের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে বাংলার কৃষকদের তালিকা দিন। তাঁদেরও কেন্দ্রীয় সরকার বছরে ছয় হাজার টাকা দিতে চায়। বিজেপি সরকার গঠন করলে প্রথমেই গরিবদের জন্য বিমা প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত চালু করবে।
পরে রাজ্য়ের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং দুই তৃণমূল সংসদ ডেরেক-ও-ব্রায়েন এবং দীনেশ ত্রিবেদী জানান, অমিত শাহ ভার্চুয়াল সভায় অসত্য কথা বলেছেন। রাজ্যে ২০১৬ থেকে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু, যাতে গরিবরা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুবিধা পান। কেন্দ্র সেটারই নকল করে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এনেছে। করোনার সময়ে তিন মাস ধরে রাজ্য সরকার গরিবদের টাকা দিচ্ছে। কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের এক পয়সাও দেয়নি। তৃণমূল এখন রাজনীতি করবে না। তারা আমফান ও করোনা নিয়ে লোকের পাশে দাঁড়িবে। আর এখন রাজনীতি করা উচিত নয়, যেটা বিজেপি করছে।
Facebook Comments