মূল্যবৃদ্ধি, টাকার দামের পতনের মতো ইস্যু নিয়ে সরব হতেই ফের সাসপেন্ড হলেন বিরোধী সাংসদরা। অধিবেশন চলাকালীন বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হল ১৯ জন সাংসদকে। বাদল অধিবেশনে শুক্রবার পর্যন্ত সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলেরও সাত জন— সুস্মিতা দেব, দোলা সেন, মৌসম বেনজির নুর, শান্তনু সেন, আবীররঞ্জন বিশ্বাস, নাদিমূল হক এবং শান্তা ছেত্রী।
সাসপেন্ড হওয়া অন্য সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন এম এম আবদুল্লা, ডি এল যাদব এবং কানিমোঝি-সহ ডিএমকের ছয়, তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির তিন, সিপিএমের দুই এবং সিপিআইয়ের এক জন। তারা সংসদের উচ্চকক্ষে মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রস্ফীতি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্রমাগত স্লোগান দিচ্ছিলেন। ওয়ালে নেমে বিক্ষোভও দেখান তারা। বিরোধী সাংসদদের এই আচরণকে ‘নিয়ম বিরুদ্ধ’ তকমা দিয়ে তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যপণ্যে জিএসটি বসানো এবং গুজরাতে বিষমদ-কাণ্ডে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আলোচনার দাবিতে মঙ্গলবার রাজ্যসভা এবং লোকসভায় সরব হন বিরোধীরা। দফায় দফায় বিক্ষোভের জেরে বেলা ২টো পর্যন্ত দুই কক্ষেরই সভা মুলতুবি হয়ে যায়। চলতি সপ্তাহে তারা আর বাদল অধিবেশনে অংশ নিতে পারবেন না। মঙ্গলবার সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ এবং রাজ্যসভায় হই হট্টগোলের জন্য সাংসদদের সাসপেন্ড করা হল বলে সংসদ সূত্রে খবর। সোমবারই কংগ্রেসের ৪ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। প্রসঙ্গত, গত বছর বাদল অধিবেশনের সময়ও সভার কাজ বানচাল করার অভিযোগে দোলা, মৌসম-সহ ছ’জন তৃণমূল সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। তবে সেই সাসপেনশনের মেয়াদ ছিল এক দিন।
ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানোর ‘অপরাধে’ সোমবার লোকসভার চার কংগ্রেস সাংসদকে সাসপেন্ড করেছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। সোমবার সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে তিনি জানিয়েছেন, সাসপেনশনের মেয়াদ চলতি বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য। সাসপেন্ড হওয়া চার কংগ্রেস সাংসদ হলেন, তামিলনাড়ুর মনিকম টেগোর (বিরুধনগর) ও জ্যোতিমণি সেন্নিমালাই এবং কেরলের টিএন প্রতাপন (ত্রিশূর) ও রম্য হরিদাস (কোঝিকোড়) এর পর সংসদ ভবন চত্বরে গাঁধীমূর্তির নীচে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান। আগামী ১২ অগস্ট পর্যন্ত সংসদের চলতি বাদল অধিবেশন চলবে। ওই সময়সীমা পর্যন্ত চার কংগ্রেস সাংসদ অধিবেশনে অংশ নিতে পারবেন না বলে সোমবার জানান স্পিকার।
প্রসঙ্গত, শুধু অধিবেশন কক্ষ নয়, গোটা সংসদ চত্বরেই আর ধর্না, বিক্ষোভ প্রদর্শন করা যাবে না বলে বাদল অধিবেশন শুরু আগে সংসদ সচিবালয়ের তরফে সাংসদদের উদ্দেশে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। কংগ্রেসের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে বাদল অধিবেশনে দলের সাংসদেরা মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। গ্যাসের দাম বাড়ানো, খাদ্যপণ্যে জিএসটি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিতর্ক চেয়ে মুলতবি প্রস্তাবের নোটিসও দিয়েছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার আলোচনায় রাজি হয়নি।
Facebook Comments