কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের গাড়িতে হামলার ঘটনায় আগামী ২ দিনের মধ্যে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একটি ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে শুক্রবারের মধ্যে এই বিষয়ে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতে কেস ডায়েরিও উপস্থাপন করতে হবে। আগামী শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ বিষয়ে আবার শুনানি হবে। নিশীথ প্রামাণিকের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই পিআইএল দায়ের করেছিলেন।
শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী বুধবার জিজ্ঞাসা করেন, শনিবারের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ এর প্ররোচনা দিয়েছেন। এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা চালায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা।
তাঁর অভিযোগ, লাঠিসোঁটা নিয়ে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়ি। তার গাড়ির উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। একই সঙ্গে তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আবেদনকারীর আইনজীবী। সেই ‘কর্মসূচি’র পরেই এই গোলযোগ হয়েছে বলে অভিযোগ। কোচবিহারের সাহেবগঞ্জে বিজেপি অফিসে হামলা চালাল শাসক দলের দুষ্কৃতীরা।
দিনহাটার বুড়িরহাট এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য হাইকোর্টকে অনুরোধ করেন শুভেন্দুর আইনজীবী। রাজ্য পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। সিবিআই এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করুক, কারণ সেই ঘটনার পরে যখন সিআইএসএফ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছিল, স্থানীয় পুলিশ স্টেশন তা গ্রহণ করেনি। একই সঙ্গে প্রায় ৪০ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে সন্দেহ।
কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) যুক্তি দিয়েছিলেন যে প্রোটোকল অনুসারে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সুরক্ষা রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্ব। তিনি যেখানেই যান সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে, কিন্তু রাজ্য তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি একে ভয়ানক ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর হামলা হচ্ছে। তারপরও কেন ব্যবস্থা নেই? আমরাও চাই সিবিআই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করুক। কেন্দ্রের অন্য একজন আইনজীবী বলেছেন যে অতীতের অনেক ঘটনায় দেখা গেছে যে পুলিশ তার কাজ করছে না। একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে, রিপোর্ট ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসা উচিত্ ছিল। একটি প্রাথমিক তদন্ত এখন একটি স্বাধীন সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। এরপর রাজ্য সরকারের কাছে ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট।
Facebook Comments