অনুশীলন চলাকালীনই মাঠে ঢুকে পড়লেন আইজল এফসির জেনারেল কোয়ার্ডিনেটর। তখন মাঠের একপাশে সেটপিস অনুশীলনে মগ্ন খালিদ ব্রিগেড। মাঠের মধ্যে ঢুকতে অনুশীলন বন্ধ করতে বললেন আইজলের কর্তা। দাবি , নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও মাঠ ছাড়েননি ইস্টবেঙ্গল । উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন রফিক ও এডুর সঙ্গেও । অথচ , ইস্টবেঙ্গল শিবিরের দাবিটা সম্পূর্ণ অন্য ।
সকাল সাড়ে নটায় আইজলের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে পৌছে হতবাক হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল । তখনও মাঠে অনুশীলন করছিলেন স্হানীয় এক মহিলা দল ও অন্যপ্রান্তে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন আইজলের পুলিশ দল । স্বাভাবিকভাবেই , অনুশীলনে নামতেই দেরি হয়ে যায় আমনা-কাটসুমিদের । প্রায় পনে দশটা নাগাদ অনুশীলন শুরু করলেও সাড়ে দশটায় মাঠে ঢুকে পড়েন ওই কর্তা । কিছুটা বাধ্য হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় অর্ণব , ব্র্যান্ডনদের ।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ম্যাচ কমিশনারকে মেল করে ইস্টবেঙ্গল । এছাড়া ম্যানেজারস্ মিটিং-এর জন্যই গাড়ি পাঠায়নি পাহাড়ী ক্লাবটি । বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে ম্যানেজারস্ মিটিং-এর জন্য আইজল এফসির অফিসে পৌছয় ইস্টবেঙ্গলের ম্যানেজার রজত গুহ । আয়জকদের এহেন আচরণে রীতিমত হতবাক ও ক্ষুদ্ধ লালহলুদ শিবির ।
এছাড়া আজ রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে খালিদ জামিলের ছেলেরা । দলের সঙ্গে পুরো অনুশীলন করেন প্লাজা । গার্সিয়ার অধীনে ফিজিক্যাল ট্রেনিং-এর পাশাপাশি বল পায়ে ‘ইনজুরি প্রিভেনসন’ ট্রেনিং-ও করে লালহলুদের ফুটবলাররা । পরে গার্সিয়া বলছিলেন , ‘এই মাঠের টার্ফটা বারাসাতের থেকেও খারাপ । এখানে ফুটবলারদের চোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । তাই চোট পাওয়া থেকে বাঁচার জন্য কিছু আলাদা ট্রেনিং-এর দরকার হয় , সেগুলোই করালাম আজ ।’
দুপুরে সাংবাদিক সন্মেলনে এসে খালিদ বলেন , ‘ আইজল এবারের লিগে অন্যতম সেরা দল । আগের বছরের তুলনায় এবছর আরও ভাল খেলছে ওরা । এখানকার মানুষ , পরিবেশ -আবহাওয়া আমার খুব পছন্দের । অনেককিছু মনে পড়ে যাচ্ছে । একজন পেশাদার হিসেবে মানিয়ে নেওয়াই আমার কাজ । নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চেয়েছিলাম , তাই কলকাতা গিয়েছি ।’ খালিদ আরও বলেন , ‘ কাল জিততে হলে আমাদের দুশো শতাংশ দিতে হবে । জেতা ছাড়া কোনও উপায় নেই। আমরা নিজেরাই নিজেদের কাজটা কঠিন করে ফেলেছি । তবে , আমি আশাবাদী । আমাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে ‘ ।
প্লাজা প্রসঙ্গে কোচের মন্তব্য , ‘ দলে কোনও চোট আঘাত নেই । প্লাজা কাল শুরু থেকেই খেলতে পারে । তবে , ম্যাচের দিন সকালে সিদ্ধান্ত নেব ।’ দলের মিজোব্রিগেড প্রসঙ্গে কোচ জানান , ‘ ওদেরকে কাল গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা নিতে হবে । ওরা খুব ভাল খেলছে । আরও দায়িত্ববাণ হতে হবে সকলকে । ‘
প্লাজা বলেন , ‘ আমি আত্মবিশ্বাসী । কোচ চাইলে মাঠে নেমে পড়তে পারি ।’
এছাড়া কাটসুমি বলেন , ‘ পাহাড়ের এই মাঠটা আমাদেরকে বিপদে ফেলতে পারে । তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গোল তুলে নিতে হবে । দলের সকলেই ফোকাসড্ । নিজেরা নিজেদের কাজটা কঠিন করেছি । এখনও সব ম্যাচই আমাদের কাছে ফাইনাল ।’
এডুর মন্তব্য , ‘ এখানে গোল খাওয়া চলবে না । শেষ মিনিট অবধি আমাদের লড়তে হবে । ওদের ছেলেরা নব্বই মিনিট অবধি দৌড়তে পারে । মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটলেই ওরা গোল করে দেবে ‘।
অধিনায়ক অর্ণবের মতে , ‘এখনও লিগে অনেককিছু হবে । আইজল ম্যাচে শুধু পয়েন্ট হারানো চলবে না । মির্নাভা নিয়ে ভাবলে চাপে পড়ে যাব । ওদের আমাদের বিপক্ষে এখনও দুটো ম্যাচ খেলতে হবে । আমরা পজিটিভ রেজাল্টে বিশ্বাসী ।’
আমনার মন্তব্য , ‘ আমাদের কাছে এখন সব ম্যাচই ফাইনাল । ওদের আমাদের বিরুদ্ধে দুটো ম্যাচ খেলতে হবে । তাই এখনই ভেঙে পড়ার কিছু নেই । ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা এগোতে চাই।’ সিরিয়ান মিডফিল্ডার আরও জুড়লেন, ‘এই মাঠের সিন্থেটিক টার্ফটা অন্যমাঠের থেকে আলাদা । খেলার শেষ দিকে পায়ের পেশিতে টান ধরার প্রবণতা দেখা যায় । এছাড়া গ্যালারি ভর্তি দর্শকের চিৎকার আমাদের বিপক্ষে যেতে পারে । তবে আমাদের শুধু ফুটবলেই মনোনিবেশ করতে হবে ।যেকোনও মুল্যে তিনপয়েন্ট পেতে হবে। ‘এখানকে খেলা চলাকালীন শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে । সেই অনুযায়ী আমাদের স্ট্যাটেজি বদলাতে হবে’ । আমনা আরও বলেন , ‘ ওদের পাহাড়ী ছেলেরা নব্বই মিনিট অবধি দৌড়তে পারে । আমাদের দলের পাহাড়ী ব্রিগেডকে আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে । গতির বিরুদ্ধে পাল্টা গতিশীল হলেই আমরা তিনপয়েন্ট পেতে পারি।’
Photograph by- নিজস্ব প্রতিনিধি
Facebook Comments