ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিতর্কিত রুয়ান্ডা নির্বাসন বিল পাস করেছে। এই বিলের উদ্দেশ্য ব্রিটেন থেকে আফ্রিকান শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো। এটি পাস করার পর, সরকার ব্রিটেনে বসবাসকারী অবৈধ শরণার্থীদের রুয়ান্ডায় ফেরত পাঠানো শুরু করবে।
রুয়ান্ডা মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকার একটি দেশ। বিবিসি জানায়, ২০২২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রুয়ান্ডার সঙ্গে একটি চুক্তির পর এই বিল আনেন। এই চুক্তি অনুযায়ী অবৈধ শরণার্থীদের জন্য রুয়ান্ডাকে ৩ হাজার কোটি রুপি দেবে ব্রিটিশ সরকার। এই অর্থ দিয়ে রুয়ান্ডা শরণার্থীদের জন্য ঘর ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।
বিলটি পাসের পর, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন যে 10 থেকে 12 সপ্তাহের মধ্যে ব্রিটেন থেকে অবৈধ শরণার্থীদের প্রথম ব্যাচকে রুয়ান্ডায় নির্বাসিত করা শুরু হবে।
বর্তমানে ব্রিটেন অর্থনৈতিক সংকট ও অবৈধ শরণার্থীদের সঙ্গে লড়াই করছে। ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টি বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতিকে অবৈধ শরণার্থীদের সঙ্গে যুক্ত করেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, 2025 সালে অনুষ্ঠিতব্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে রুয়ান্ডা বিল পাশ হলে ঋষি সুনাক উপকৃত হতে পারেন।
2019 সালে ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে, কনজারভেটিভ পার্টি রুয়ান্ডা বিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং ঋষি সুনাক এই দল থেকে এসেছেন। যাইহোক, 2022 সালের জুনে, রুয়ান্ডাবিলকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছিল। পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়। ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে। কিন্তু, এখন বিলটি সংসদে পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনে পরিণত হয়েছে।
ইউরোপের মানবাধিকার সংগঠনগুলো ঋষি সুনাকের রুয়ান্ডা বিলের সমালোচনা করেছে। তাঁর মতে, এই বিল ‘বেঁচে থাকার অধিকার’ বিরোধী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ না মানার অভিযোগ তুলেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বিলটি ধনী-গরিবের মধ্যে পার্থক্য করে। বিলটি মানুষের মধ্যে বৈষম্য বাড়াবে। এ কারণে সরকার অবৈধ উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে অপরাধ করবে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’ তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, এ বছর ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যকার ইংলিশ চ্যানেল পার হয়ে ব্রিটেনে পৌঁছার সংখ্যা ৪৬০০-র বেশি। এ ছাড়া আজ এই চ্যানেল পার হতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। যারা প্রাণ হারায় তাদের মধ্যে সাত বছরের একটি মেয়েও ছিল।
Facebook Comments