চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের স্বপ্নের প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এখন জটিলতার মধ্যে চলছে। ইতালি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বে একটি নির্বাহী দল চীন সরকারকে এ বিষয়ে অবহিত করেছে। ইতালির এই সিদ্ধান্তকে জিনপিং ও চীনের জন্য বড় সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ইতালি ইউরোপের প্রথম দেশ যারা বিআরআইতে যোগ দিতে রাজি। প্রধানমন্ত্রী মেলোনি সবসময় এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
বিআরআই চুক্তিকে ইতালি ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ইতালীয় মিডিয়া জানিয়েছে যে কয়েকদিন আগে, ইতালীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী মেলোনির নেতৃত্বে একটি দলের পক্ষে, চুক্তি বাতিল করে চীনা কর্মকর্তাদের কাছে একটি নোট পাঠিয়েছে। এই নোট পাঠানোর আগে চীনকে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এই নোটের পাশাপাশি ইতালি চীন সরকারকে চার বছর পর বিআরআই থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথাও জানিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে ইতালি ও চীনের মধ্যে পর্দার আড়ালে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে কিন্তু কোনো ফল হয়নি।
বলা হয়েছে কিছু কূটনৈতিক ভুল বোঝাবুঝির কারণে ইতালি একটি মৌখিক নোট তৈরি করেছে। নোটে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় কৌশলগত বন্ধুত্বের প্রতিশ্রুতিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইতালির রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বহু বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কন্তেকে প্ররোচিত করেছিল চীন। এতে ইতালির সম্পৃক্ততায় আমেরিকা খুবই ক্ষুব্ধ ছিল। ইতালি আনুষ্ঠানিকভাবে এর থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে। ইতালীয় সরকার এই চুক্তিটি বাতিল করে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বলা হচ্ছে, চুক্তির শর্ত পরিবর্তন করে ইতালি এই পরিস্থিতি এড়াতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু চীন সরকার এসব শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায়। ইতালি ছিল একমাত্র G7 দেশ এই প্রকল্পে জড়িত। আপাতত চীন এ ব্যাপারে কী প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটাই দেখার বিষয়। তবে এখন পর্যন্ত উভয় দেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। 23 মার্চ, 2019 তারিখে, তৎকালীন ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কন্টে চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।
Facebook Comments