🇵🇰করাচির রাস্তায় ‘পাকিস্তান বনেগা খালিস্তান’ স্লোগান

খালিস্তানের সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের, যাদের আইএসআই পাকিস্তানে ডেকেছিল, তাদের ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য 21 দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। পরে, যখন এই প্রশিক্ষণ শেষ হয়, খালিস্তানি চরমপন্থীরা যারা এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই-এর হয়ে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিল তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই ‘বাউন্স ব্যাক’ করে। গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে এসে প্রশিক্ষণ নেওয়া খালিস্তানি চরমপন্থীদের একই দলের স্লিপার সেল সন্ত্রাসীরা ‘পাকিস্তান বনেগা খালিস্তান’ স্লোগান লিখে করাচির রাস্তায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি মনে করে যে পাকিস্তানের দেওয়া প্রশিক্ষণে ভারতের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য একটি সম্পূর্ণ নীলনকশা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু অভ্যন্তরীণ বিরোধের পর পাকিস্তানেই এই লোকেরা বিদ্রোহ করে। এখন খালিস্তানি সন্ত্রাসীদের একটি বড় অংশ পাকিস্তানের একটি অংশে খালিস্তানের দাবি তুলতে শুরু করেছে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানের আইএসআই তার স্থানীয় হ্যান্ডলারের মাধ্যমে করাচিতে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী খালিস্তানি চরমপন্থীদের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিল। জুলাই এবং আগস্ট মাসে 7 দিন ধরে কানাডা, আমেরিকা এবং যুক্তরাজ্যের কিছু খালিস্তান চরমপন্থী পাকিস্তানে বসবাসকারী খালিস্তানি সন্ত্রাসীদের সাথে দেখা করেছিল। সূত্রের মতে, এই সময়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং তাদের সেনাবাহিনীর কিছু অফিসার ভারতের বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করার সময় খালিস্তান চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। প্রশিক্ষণটি সাত দিনের তিন ধাপে সম্পন্ন হয়।

এই সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিতে, প্রতিটি সাত দিনের তিনটি ধাপে সংগঠিত, ভারতের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে খালিস্তানের সমর্থনে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য। সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এরপর প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে খালিস্তান সমর্থকদের একটি দল কানাডায় গিয়ে শুধু পাঞ্জাব নয়, দেশের রাজধানী দিল্লিসহ বিশ্বের বিভিন্ন বড় দেশে ভারতের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা শুরু করে। প্রশিক্ষণের সময় পরিবেশ নষ্ট করা শুরু করে। সূত্র বলছে যে এই সময়কালে কানাডা থেকে আগত কিছু খালিস্তান সমর্থক, পাকিস্তানে বসবাসকারী খালিস্তানি সন্ত্রাসী এবং আইএসআই সহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে একটি বড় চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তিটি পাঞ্জাবে সরবরাহ করা মাদক ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত বলে জানা গেছে। সূত্র বলছে যে এই চুক্তিতে পাকিস্তানে বসে থাকা খালিস্তানি সন্ত্রাসীরা কানাডায় কিছু খালিস্তান সমর্থকদের কাছে নির্ধারিত পরিমাণ এবং তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। এ নিয়ে এই খালিস্তানি চরমপন্থীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ দেখা দেয়।

সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সাথে যুক্ত সূত্র বলছে যে এই পুরো বিষয়টিতে শিখ ফর জাস্টিসের গুরপতবন্ত সিং পান্নু হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং তার খালিস্তান এজেন্ডাকে সামনে রেখে কথা বলেছিলেন। সূত্র বলছে, এই বিষয়ে পাকিস্তানে বসবাসকারী কিছু খালিস্তানি সন্ত্রাসীও পাকিস্তানকে তাদের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই কারণেই পাকিস্তানের করাচি, লাহোর এবং ইসলামাবাদ শহরে খালিস্তান সমর্থকরা খালিস্তানের পক্ষে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্লোগান লিখতে শুরু করে। করাচিতে রাস্তা-ঘাট এমনকি আন্ডারব্রিজের নিচে ‘পাকিস্তান বানেগা খালিস্তান’ স্লোগান লিখে তারা তাদের উদ্দেশ্য ও অভিপ্রায় স্পষ্ট করে দিয়েছে।

প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মেজর সুমেশ চৌধুরী বলেছেন, যেহেতু পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে খালিস্তানিদের একটি বড় জায়গা দিয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালানোর জন্য যখন পাকিস্তানে এত বড় প্লাটফর্ম দেওয়া হচ্ছিল, তখন পাকিস্তান এই ষড়যন্ত্র তাদেরও পুড়িয়ে ফেলতে পারে কিনা তা ভেবে ভুল করেছিল। তিনি বলেছেন যে যেভাবে তথ্য আসছে তাতে পাকিস্তানের একটি বড় অংশও খালিস্তানিদের উস্কে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানে তৈরি করা বড় ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত হতে চলেছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রাপ্ত ইনপুট অনুসারে করাচির রাস্তায় যেভাবে খালিস্তানের সমর্থনে স্লোগান উঠেছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বসবাসকারী খালি স্থানীয় সমর্থকরা লাহোর থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত এই ধরনের স্লোগান তোলার জন্য চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করেছে।