অবশেষে বাড়ি ফিরবে ৯ ইঞ্চির সেই ছোট্ট শিশুটি। কনোর নামের শিশুটি গত বছরের জুলাই মাসে মাত্র ১১ আউন্স ওজন নিয়ে আগমন ঘটে পৃথিবীতে।কনোরের আকার ছিল মানুষের হৃদপিণ্ডের সমান আর ওজন? একটি সোডা ক্যানের চাইতেও কম ছিল তা। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এমন ঘটনা খুবই বিরল। কারণ জন্ম নেওয়ার মতো আকারই ছিল না কনোরের। জন্মের পর সে এতটাই ছোট ছিল যে তার বাবা এক হাতের তালুতেই ধরে রাখতে পারতেন তাকে।নিউইয়র্কের ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টিতে ব্লাইথেডেল চিলড্রেন হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডেনিস ডেভিডসন বলেন, খুব সম্ভবত কনোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেঁচে থাকা সবচেয়ে ছোট সন্তানদের একজন। ১৬ এপ্রিল চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বাড়ি ফিরতে পারবে কনোর। এই খবরে বেশ খুশি তার বাবা জ্যামি এবং মা জন ফ্লোরিও। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে কনোরের ওজন প্রায় ১১ পাউন্ড।
কনোরের বাবা ২৯ বছর বয়সী জ্যামি ফ্লোরিও বলেন, জন্মের সময় মাত্র নয় ইঞ্চি লম্বা ছিল কনোর। কিন্তু নিজের সঙ্গে লড়াই করে জিতে গেছে সে।ডেভিডসন বলেন, ওর বাবা মা অবিশ্বাস্যভাবে কনোরের ক্লিনিকাল অবস্থার সামান্যতম বিষয়গুলোও পর্যবেক্ষণ করত। এর মধ্যে ছিল দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ, নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার এবং খাওয়ানোর সমস্যা। কনোরের বাবা নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা অবশেষে ওকে এখানে আনতে পেরে খুব খুশি। কিন্তু এখন আমাদের কাজ ও দায়িত্ব বাড়ছে। এখন ওর যত্ন নেওয়ার জন্য আমাদের কোনো সহকর্মী নেই। সবটাই আমাদের করতে হবে।’ জরুরি সি-সেকশনের মাধ্যমে ডেলিভারি হয়েছিল কনোরের। জন্মের পর পাঁচ মাস তাকে মারিয়া ফেরারি চিলড্রেন হাসপাতালে নবজাতকদের আইসিইউতে রাখা হয় তাকে। পরে ব্লাইথেডেল চিলড্রেন হাসপাতালে রাখা হয় আরও চার মাস।
জ্যামি ফ্লোরিওর গর্ভধারণের ২৫তম সপ্তাহে চিকিৎসকরা তাকে বলেন যে, কনোরের বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া যাচ্ছে না। পর্যবেক্ষণের জন্য তাকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। জানা যায়, জ্যামির প্ল্যাসেন্টারে থাকা কিছু সমস্যার কারণে গর্ভে থাকা কনোর স্বাভাবিকভাবে পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ করতে পারছিলেন না। এর এক সপ্তাহ পরেই জরুরী সি-সেকশনের প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন চিকিৎসকরা। জ্যামি ফ্লোরিও বলেন, ‘আমরা জানতাম যে কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও যা যা করা সম্ভব তা তা করব বলে ঠিক করলাম। যদিও কনোর ২৫ সপ্তাহের ভ্রূণের আকারের ছিল।’ ফ্লোরিও দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন এই বিষয়ে যে শেষ অব্দি তাদের সন্তান সুস্থ ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তার বিশ্বাসই বাস্তবায়ন হতে চলছে বলা যায়।
Facebook Comments