ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে লন্ডভন্ড সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঘরবাড়ি ও গাছপালা। রোববার (১৪ মে) দুপুরে সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু বাড়িঘর ও বিদ্যুতের খুঁটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সেন্টমার্টিনে বাতাসের গতি প্রচুর। অনেক ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। শুনেছি গাছ পরে এক নারীর মৃত্যুও হয়েছে। কিন্তু বৈরি পরিবেশের কারণে বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, বাতাসের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর। সমুদ্রের পানি বাতাসে উড়িয়ে নিচ্ছে। বিচের ভেজা মাটি তুলে নিচ্ছে তীব্র বাতাসে। মানুষের ঘর বাড়ির টিন, ছাউনি, কাঠ, বাঁশ উড়িয়ে নিচ্ছে। বড় বড় গাছ ও নারিকেল গাছ দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। দোকানপাট ভেঙে উড়ে গেছে।
পুরো সেন্টমার্টিনে বৃষ্টির পানি ও বাতাসের তীব্রতায় কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সব ধোঁয়াশা হয়ে আছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা মূল আঘাত মিয়ানমারের চলছে। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকি কেটে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা টেকনাফ থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্বে দক্ষিণ মিয়ানমারের সিট্যুয়ে অঞ্চল দিয়ে যাবে। রোববার (১৪ মে) বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তর ভবনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ আঘাত হেনেছে মিয়ানমারের উপকূলীয় অঞ্চলে। এরই মধ্যে দেশটির রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিট্যুয়ে শহরের বেশ কিছু গাছ ও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোখার তাণ্ডবে। রাখাইন রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা থেকে লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা রেড অ্যালার্ট।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্যা ইরাবতি রোববার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মোখার প্রভাবে সিট্যুয়ে ও দক্ষিণে থান্ডওয়ে শহরে প্রবল বাতাস ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় দেশের বহু এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে মিয়ানমার। এছাড়া দেশটির উপকূলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে লক্ষাধিক মানুষকে।রাখাইনের সিট্যুয়ের পাশাপাশি কিয়াউকফিউ, মংডু, রাথেদাউং, মাইবোন, পাউকতাও এবং মুনাং শহরে লাল সতর্কতা জারি করেছে মিয়ানমারের জান্তা।
এছাড়া এই শহর ও এলাকাগুলোতে একই সতর্কতা জারি করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা-বিরোধী বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার। ঘূর্ণিঝড় মোখা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
Facebook Comments