শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর স্যাভয় নামের একটি জনপ্রিয় সিনেমা হল সংলগ্ন সড়কে আকস্মিক এক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যদিও এতে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) কলম্বো পুলিশের দেওয়া তথ্যের প্রতিবেদনে এই বোমা বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার স্থানীয় সময় সকালে কলম্বো পুলিশ শহরের সেই সিনেমা হল সংলগ্ন সড়কে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের সন্ধান পায়। পরে এটিকে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
এদিকে কলম্বো পুলিশের গণমাধ্যম ইউনিটের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম নিউজ ফার্স্ট জানায়, স্যাভয় নামে সেই সিনেমা হলের কাছে আগে থেকে পেতে রাখা সেই বোমাটি একটি সন্দেহজনক মোটরসাইকেলের ভেতর রাখা ছিল। পরবর্তীতে বাইকটির ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পুলিশ এর মধ্যে বিস্ফোরকের অস্তিত্ব পায়। যদিও তখন তা সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়।
পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘অভিযানের সময় মোটরবাইকটির আসন খুলতেই সেই বোমাটিকে দেখা যায়। পরে একটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। এতে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহত ছাড়াই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
এর আগে গত রবিবার (২১ এপ্রিল) দেশটিতে ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় কলম্বো ও এর আশপাশের ৩টি গির্জা ও আরও ৩টি হোটেলে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৮ বিদেশি নাগরিকসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৯ জনে। তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে চার শতাধিক।
এই হামলায় নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশের একটি শিশু রয়েছে। হামলায় নিহত সেই বাংলাদেশি শিশুটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের নাতি। ভয়াবহ সেই বোমা হামলার সময় নিহত জায়ান তার বাবা-মার সঙ্গে শ্রীলঙ্কাতেই অবস্থান করছিল।
অপরদিকে নির্মম এ হামলার দায় স্বীকার করে ইতোমধ্যে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) আইএস নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আমাক নিউজ এজেন্সিতে শ্রীলঙ্কায় হামলার দায় স্বীকার করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। যদিও এর আগে দেশটির চরমপন্থি ইসলামিক গোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াতকে (এনটিকে) হামলার মূল সন্দেহভাজন হিসেবে দায়ী করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার।
Facebook Comments