পশ্চিমবঙ্গে মহাসমারোহে সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষারম্ভ পয়লা বৈশাখ। বঙ্গাব্দের প্রথম দিনটিতে বিপুল উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সাথে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে সমগ্র পশ্চিম বাংলায়। বাংলার গ্রামীণ এবং নাগরিক জীবনের মেলবন্ধন সাধিত হয়ে সকলে একসূত্রে বাঁধা পড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আনন্দে। সারা চৈত্র মাস জুড়েই চলতে থাকে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তি বা মহাবিষুব সংক্রান্তির দিন পালিত হয় গাজন উৎসব উপলক্ষ্যে চড়ক পূজা অর্থাৎ শিবের উপাসনা। এদিন গ্রামবাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত হয় চড়ক মেলা। এই মেলায় অংশগ্রহণকারী সন্ন্যাসী বা ভক্তগণ বিভিন্ন শারীরিক কসরৎ প্রদর্শন করে আরাধ্য দেবতার সন্তোষ প্রদানের চেষ্টা এবং সাধারণ মানুষের মনোরঞ্জন করে থাকেন।পয়লা বৈশাখ প্রতিটি পরিবারে স্নান সেরে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করার রীতি বহুলপ্রচলিত। বাড়িতে বাড়িতে এবং সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে মিষ্টান্ন ভোজন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির অধিকাংশই এদিন থেকে তাদের ব্যবসায়িক হিসেবের নতুন খাতার উদ্বোধন করে, যার পোশাকি নাম হালখাতা। এই উপলক্ষ্যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে মঙ্গলদাত্রী লক্ষ্মী ও সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনা করা হয়। নতুন খাতায় মঙ্গলচিহ্ন স্বস্তিকা আঁকা হয়ে থাকে।
এতো গেল পয়লা বৈশাখের কথা। আপনাদের কাছে পয়লা বৈশাখ মানে কি? খাওয়া দাওয়া নিশ্চয় আছে সেই তালিকায়। জানেন কি “সনেট”র হেঁসেল এ কি হচ্ছে এই দিন? একবার ঢুঁ মেরে আসবেন নাকি? পাবেন ডালের বড়া, মাছের রোল, কুরকুরে মুরগি ভাজা,নারকেল পোস্ত বড়া, মোচার ঘণ্ট, শুক্ত, ছানার রোষা, কাতলা কালিয়া, আলু দিয়ে মুরগির ঝোল, কালো ভুনা মাংস, নারকেল দিয়ে ছোলার ডাল, লুচি, সাদা ভাত, কাজু কিশমিশ পোলাও। মিষ্টিও বাদ নেই আছে রস মুন্ডির পায়েস, পাটিসাপটা।
পয়লা বৈশাখ মানেই অনেক বেশি বাঙালিয়ানা। “সনেট” সেই কথা ভোলে কি করে। সেই ভাবনা মাথায় রেখেই সারাদিনের মেনুতে এনেছে চমক। একে দেখে নিন।
“সনেট” ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার জন্য রয়েছে পুরনো স্বাদ। থাকবে বেলের সরবত, গন্ধরাজ ঝোল, টমেটো পোড়া, কচু বাটা, ডাল ভর্তা, বেগুন পোড়া, গ্রিন স্যালাড আম কাসুন্দি, টক দই।
ভাবছেন এই দিন ভাত ছাড়া অন্য কিছু খাবেন? তার ব্যাবস্থাও আছে। কড়াইশুঁটির কচুরি, আলু চচ্চরি, ডিম পরোটা, কিমা ঘুগনি, নারকেল দিয়ে ঘুগনি। স্টারটার এ কি আছে জানতে চান? বলছি। পাট শাকের বড়া, বেগুনি, আলু চপ, মাংসের চপ, কুরকুরে গন্ধরাজ মুরগি, মাছের চপ।
ভাবছেন মেইন কোর্স বলে কি আলাদা কিছু নেই? আছে আছে তাও আছে। মরিচবাটা খাসির মাংস, মুর্শিদ মিয়ার মুরগির ঝাল, সর্ষে মাছ, এঁচোড়ের ডালনা, নারকেল ভাপা লাউ, চর্চরী, মুগ ডাল, সাদা ভাত, বাসন্তী পোলাও, লুচি।
যারা ভোজন রসিক তারা চাটনি যে খুজবেন তা জানা কথা। দেখে নিন আমসত্ত্ব খেজুরের চাটনি, টমেটো কুলের চাটনি, আনারসের চাটনি, কাঁচা আমের চাটনি।
শেষ পাতে মিষ্টিও পড়বে। ভাপা দই, চকোচিপ ডামপ্লিং উইথ চিল্ড বেঙ্গলি সিন্নি, মটকা আইস্ক্রিম, গন্ধরাজ মুস। আর অপেক্ষা নয় এই বারের বছরের শুরু হোক পরিবারকে নিয়ে “দ্য সনেট” এ।
ছবি – দ্য সনেট
Facebook Comments