গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪,২১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৯৭ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬৭,১৫২ জন। অপরদিকে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২,২০৬ জন। এদিকে, ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭,১৬১ এবং মৃত্যু হয়েছে ২,২১২ জনের। ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ২০,৯৬৯ জন। দেশটিতে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ৪৩,৯৮০টি। সোমবার সকাল পর্যন্ত ৩১.১৪% রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে, সোমবার বিকেলে দেশব্যাপী লকডাউনের বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
গত ২৫ মার্চ থেকে দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। লকডাউন চলাকালীন এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ৫ম বারের মতো বৈঠক করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ভারতে করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র। সেখানে রোববার নতুন করে আরও ১,২৭৮ জন প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ওই রাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২২,০০০। অপরদিকে সেখানে ৮ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৩,৫০০ এবং মারা গেছে প্রায় ৫০০ মানুষ। অপরদিকে তামিলনাড়ুতে রোববার নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬৯ এবং মারা গেছে তিনজন। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭,২০০।
এদিকে, মঙ্গলবার থেকে সীমিত আকারে দূরপাল্লার ট্রেন চালু করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় রেল কর্তৃপক্ষ। ভারতের রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেছেন, ‘আগামী ১২ মে থেকে ধীরে ধীরে যাত্রীবাহী ট্রেন পুনরায় চালু করা হবে।
প্রাথমিকভাবে ১৫ জোড়া বিশেষ ট্রেন রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে দেশের বড় স্টেশনগুলোতে চলাচল করবে। ১১ মে বিকেল ৪টা থেকে ট্রেনগুলোর টিকিট বুকিং শুরু হবে।’ তৃতীয় দফার লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই ১২ মে অর্থাৎ পরশু থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর ঘোষণা দিল সরকার। মঙ্গলবার রাজধানী নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে ডিব্রুগড়, আগরতলা, হাওড়া, পাটনা, বিলাসপুর, রাঁচী, ভুবনেশ্বর, সেকেন্দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, তিরুঅনন্তপুরম, মাডগাঁও, মুাম্বই সেন্ট্রাল, আহমেদাবাদ এবং জম্মু-তাওয়াই এই ১৫টি রুটে চলবে এসব যাত্রীবাহী ট্রেন। তবে ধাপে ধাপে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
#WATCH Delhi: Health Ministry briefing on COVID19 situation in the country (11th May) https://t.co/XWtPBUy7V7
— ANI (@ANI) May 11, 2020
পশ্চিমবঙ্গ : রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল একশোর কাছাকাছি কিংবা তারও বেশি। কিন্তু রোববার স্বাস্থ্য দফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৫৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে; যা ওই রাজ্যে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের করোনা নিয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, একই সময়ে নতুন করে আরও ১৪ কোভিড-১৯ রোগী মারা গেছেন। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯৩৯ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ১০ জনই কলকাতার। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের স্যংখা বেড়ে হয়েছে ১৮৫ জন। নতুন যারা করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন তারা কলকাতা, হাওড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা ও হুগলি জেলার বাসিন্দা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে এখনো করোনামুক্ত রয়েছে সাতটি জেলা। এসব জেলাকে সবুজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো কোচবিহার, পুরুলিয়া, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুরা, আলিপুরদুয়ার ও ঝাড়গ্রাম। আর সব থেকে বেশে আক্রান্ত ১১টি জেলাকে রাখা হয়েছে রেড জোনে। এই ১১টি জেলা হলো কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ ও বীরভূম। সামান্য আক্রান্ত পাঁচ জেলা রয়েছে কমলা জোনে। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় রোগমুক্ত হয়েছেন আরও ৪৫ জন। সব মিলিয়ে ওই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪১৭ জন সুস্থ হয়েছেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রোগমুক্তির হার ১৯.২৫% থেকে বেড়ে হয়েছে ২১.৫১%।
Facebook Comments