রাজ্য ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে রাজ্য সরকারকে ফের কড়া চিঠি দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষ প্রতিনিধি দল। সোমবার রাজ্য ছাড়ার আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে একটি দু’পাতার চিঠি দেন সংশ্লিষ্ট দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র। সেখানে রাজ্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ যেটি তোলা হয়েছে, সেটি হল রাজ্যের কর্তব্যের গাফিলতির অভিযোগ। চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর হার ১২.৮ শতাংশ। যা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অপূর্ব বলেন, ‘৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে ৮১৬ টি কোভিড পজিটিভ কেস পাওয়া গিয়েছিল। তার মধ্যে মারা গিয়েছিলেন ১০৫ জন। যার অর্থ পশ্চিমবঙ্গে কোভিডে মৃত্যুর হার ১২.৮ শতাংশ। এই উচ্চ মৃত্যুর হার স্পষ্ট ইঙ্গিত করছে যে পশ্চিমবঙ্গে নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে এবং নজরদারিও অত্যন্ত দুর্বল।
এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় দল জানিয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্যের তথ্যের মধ্যে বিস্তর গোলমাল রয়েছে। রাজ্য ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত যে তথ্য দিয়েছে তাতে বলা হয়েছিল রাজ্যে ৫৪২ টি অ্যাকটিভ কেস রয়েছে, ১৩৯ জন চিকিত্সার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ৩৩ জন মারা গিয়েছেন। অর্থাত্ মোট ৭৪৪টি কেস। ওইদিনই আবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রধানসচিব কেন্দ্রকে একটি চিঠিতে জানিয়েছেন, ওই দিন পর্যন্ত মোট ৯৩১টি পজিটিভ কেস পাওয়া গিয়েছে।
এই তথ্যের ফারাক প্রমাণ করছে রাজ্য সরকার নিজের কাজের ক্ষেত্রে মোটেই সত্ নয়। যার ফলে রাজ্যের করোনা চিত্র মোটেই স্পষ্ট নয় এখনও পর্যন্ত। পাশাপাশি, ১ ও ২ মে রাজ্যের তরফ থেকে করোনার মোট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় দল।
একইসঙ্গে অপূর্ব চন্দ্র স্পষ্টই জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজ্যের কাছ থেকে কোনও সহায়তাই পাওয়া যায়নি। একমাত্র স্বাস্থ্যদফতরের সচিব একদিন অর্ধেক তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু বারংবার বলার পরেও অন্য কোনও দফতরের তরফ থেকে যোগাযোগ করা কিংবা তথ্য দেওয়া হয়নি। কার্যত রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে শক্রুর মতো ব্যবহার করার অভিযোগও তোলা হয়েছে এই চিঠিতে।
কেন্দ্রীয় দলের পক্ষ থেকে স্পষ্টই বলা হয়েছে, লকডাউন সফল করতে রাজ্য সরকার যে পদক্ষেপ করেছে বলে বলা হয়েছে, তার বিন্দুমাত্র কার্যক্ষেত্রে চোখে পড়েনি। ফলে রাজ্যের সেই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনে রাজ্যকে মোট ১১টি চিঠি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কোনটির উত্তর পাওয়া যায়নি। অপূর্ব জানিয়েছেন, এই রাজ্য সংক্রান্ত বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তারপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্য সরকারকে যা জানানোর জানিয়ে দেবে।
Facebook Comments