গত ৪৫ বছরে বেকারত্বের সর্বোচ্চ হার ও গত ছয় বছরে আর্থিক প্রবৃদ্ধির সর্বনিম্ন রেকর্ড নিয়ে ভারতের অর্থনীতির দশা এখন বেহাল। এমন অবস্থায় আগামী বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার অশনিসংকেত দিল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া)। শনিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, অর্থনীতির করুণ দশার ফলে দেশে ব্যাংকের অনাদায়ি ঋণের বোঝা আগামী এক বছরে বাড়তে পারে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে ৯.৯% পৌঁছাবে। একই সঙ্গে দেশটির ব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধির হার গত ৫৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে তলানিতে ঠেকেছে বলে জানিয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী একটি সংস্থা।
RBI releases December 2019 Financial Stability Reporthttps://t.co/CpAdMaGbqs
— ReserveBankOfIndia (@RBI) December 27, 2019
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর রোববার ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্ক বার্তাকে বেশ কিছু দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ দেশটির রাজস্ব আয়ের পরিমাণ হ্রাসের পাশাপাশি নভেম্বর পর্যন্ত বাজেট ব্যয় (আর্থিক ঘাটতি) ১০৭% অতিক্রম করেছে। আরবিআই এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রাখার অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। গত জুলাই এবং সেপ্টেম্বরে বাজারে চাহিদাও কমেছে; যার ধাক্কা লেগেছে প্রবৃদ্ধিতে।
অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী একটি সংস্থা বলছে, চলতি অর্থবছরে ভারতে ব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধির হার সাড়ে ৬ থেকে ৭% মধ্যে আটকে থাকতে পারে। গত বছর যা ১৩.৩% ছিল। ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধির এই হারের পূর্বাভাস যদি সত্যি হয় তাহলে ১৯৬২ সালের পর ভারতে ঋণ বৃদ্ধির হার এই প্রথম এত নিচে নামতে যাচ্ছে। ওই বছর ঋণের বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৪%। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বলছে, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো নয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির হার আরও কমেছে। যা মাত্র ৮.৭%।
প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী ভারতের ভেঙে পরা অর্থনীতির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন। রাহুল গান্ধী বলেন, ‘এখন প্রধানমন্ত্রীর যে কাজ, সেটা তিনি করতে পারছেন না। কেউ কিছু কিনছেন না, কল-কারখানা বন্ধ, বাজারে মন্দা, প্রবৃদ্ধি তলানিতে। অর্থনীতি কঠিন বিষয় নয়। আগে প্রবৃদ্ধির হার ৯% ছিল, এখন ৪% ঘরে নেমে এসেছে।
Facebook Comments