জেলায় জেলায় বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া পূর্বাভাস ছিলই, সেই মতই ঝেঁপে এল বৃষ্টি। তবে, গরমের হাত নিস্তার পেলেও স্বস্তি কিন্তু এল না। এদিন বৃষ্টির সঙ্গেই আসে ঝোড়ো হাওয়া, বজ্রবিদ্যুত্ ও শিল। আর এতেই ঘটল বিপত্তি, বাজ পড়ে রাজ্যে মৃত্যু হল ১৫ জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন মুর্শিদাবাদে ৩, পূর্ব বর্ধমানের ৪, পশ্চিম মেদিনীপুর ও হাওড়ায় ৩ জন করে এবং উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনি ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃহস্পতিবার বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির ও দমকা ঝড়ের পূর্বাভাস দেয় আবহাওয়া অফিস। সেই পূর্বাভাস সত্যি করেই এদিন বৃষ্টি হয় জেলায় জেলায়। বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা সহ শহরতলিতেও।
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বাজ পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে মাঠে ধান তোলার সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় সালার থানার অন্তর্গত কাগ্ৰামের নেকবার শেখ (২২) ও হাবিব শেখ (২৪)-এর। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। অন্যদিকে সামসেরগঞ্জের লক্ষ্মীনগরে গঙ্গায় মাছ ধরার সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় সালাউদ্দিন শেখ (২১)-এর। এই সময় আরও ৩ জনও আহত হন বজ্রাঘাতে। ঝড় বৃষ্টির জেরে কলাবাগান ও আমেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবারও মুর্শিদাবাদে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় দুজনের।
এদিন বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের একজন হলেন মনসুর আলী শেখ (৩৫), পেশায় কৃষক বাড়ি ভাতারের বেলেন্ডা গামে। কালনায় মৃত্যু হয়েছে, খোকন শেখ (৪০)-এর। এছাড়াও মৃতদের মধ্যে রয়েছেন খণ্ডঘোষের তোরকোনার বাসিন্দা বাসুদেব রায় (৫২) ও মঙ্গলকোটের জাহাপুর গ্ৰামের বাসিন্দা আপাল লোহার (৪১)।
পাশাপাশি, হাওড়ার আমতা ও বাগনানে বজ্রাঘাতে তিন জনের মৃত্যু ও ৩ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম মহানন্দ ঘুকু (৫৩), ও মোঃ ইসমাইল (৩৭); দুজনেই আমতার বাসিন্দা এবং বাগনানের জুলফিকার হোসেন।
উত্তর ২৪ পরগনায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে মিলন বিশ্বাস ও ধীরাজ পালের। তাদের বাড়ি হাবড়ার বেড়গুম পালপাড়া এলাকায়। এছাড়াও ঝড়বৃষ্টিতে গাইঘাটায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বনগাঁতেও হয় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি।
মেদিনীপুরেও এদিন চলে ঝড়ের তাণ্ডব সঙ্গে শিলাবৃষ্টির দাপট ও বজ্রপাত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজ পড়ে শালবনির বাঘমারীতে বছর ৪৪-এর স্বপন ভুঁইয়ার মৃত্যু হয়। চন্দ্রকোণার যাদবনগরে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় তাপস পাতর (৩৬) এবং শিমুলডাঙার বৈদ্যনাথ সরেন (৪৫)-এর।
উল্লেখ্য, এনাদের বেশিরভাগই হয় মাঠে কাজ করছিলেন বা মাঠে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু বজ্রের কারণে অকালে প্রাণ হারাতে হল সকলকেই।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী চার-পাঁচ দিন বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুত্ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি তাপমাত্রা বৃদ্ধিরও পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। যেখানে বৃষ্টি হবে সেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে। উত্তরবঙ্গের উপরের ৫ জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাশাপাশি আগামী ২৪ ঘন্টায় মালদা ও দুই দিনাজপুরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
Facebook Comments