আশীষ বন্দোপাধ্যায় আনারুলকে বলে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন’, বগটুই কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবী মিহিলাল শেখের। তাঁর অভিযোগ, রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় বগটুই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। যদিও আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্লেখ্য মিহিলাল শেখ মৃতদের পরিবারের আত্মীয় এবং এই কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী। মিহিলালের অভিযোগ, এতদিন আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্যই তিনি মুখ খুলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের দশজনকে পুড়িয়ে মারল, তারা জেলের মধ্যে থেকেও বাইরের খাবার খাচ্ছে, বিয়ার খাচ্ছে। আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় এসব করছে। আমাদের উপর তিনি প্রচণ্ড অত্যাচার করেছেন।’
তাঁর দাবী, আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেই আনারুল হোসেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর আগে আমাদের ওপর হওয়া অত্যাচারের কথা জানাতে গিয়েছিলাম তাদের কাছে, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তিনি এও দাবী করেন, মুখ্যমন্ত্রী বললেও নিচু স্তরের লোকেরা কাজ ঠিকমত করছে না। প্রশাসনের লোকেরাও তাদের কাছে ঠিকমত খাবার কাপড় পৌঁছে দিচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, এর আগে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছিলেন, আনারুল হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরানোর কথা তিনি আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলেন। তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল বক্রিকান্দি ধৃত আনারুল আশীস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ।
এদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এসব মিথ্যে। আমি মিহিলাল শেখকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। সে যেসব কথা বলছে, সেই অভিযোগের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। ঘটনার এক মাস পর উনি এসব শেখানো বুলি বলছেন। আমার মনে হয়, সুপরিকল্পিতভাবে এটা করা হচ্ছে। এই ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না।’
উল্লেখ্য, বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুইয়ে দশটি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে সেখানে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় আট জনকে। পরবর্তীতে অগ্নিদগ্ধ আরও একজন চিকিত্সাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। প্রথমে এই ঘটনার তদন্তে রাজ্য সরকার সিট গঠন করলেও, পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্ট এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ভার সিবিআইয়ের হাতে দেয়। এই ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে আগেই রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে। আনারুল সেইসময় দাবী করে, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে, এই ঘটনায় জড়িত নয়। এরপর সিবিআই তদন্তের ভার নিলে, তাকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
Facebook Comments