রাজ্যের দাবি, অন্তত ৮৫ শতাংশ শিশুদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ না হলে স্কুল খোলা সম্ভব নয়। ফলে, স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে আরও কিছু সময় চায় রাজ্য সরকার। শুক্রবার রাজ্যের তরফ থেকে এই আবেদনই পেশ করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্যের এই আবেদন মেনে নেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়, স্কুল খোলা সম্পর্কে বিবেচনা করার জন্য রাজ্য সরকারকে আগামী ২ সপ্তাহ সময় দেওয়া হল। এই ২ সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যকে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এদিন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে জানায়, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি স্কুল খোলা নিয়ে হাইকোর্টকে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবে রাজ্য সরকার। সেই দিনই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, রাজ্যে স্কুল খোলা নিয়ে ২টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় রাজ্য সরকারের তরফে এদিন সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি এদিন কোর্টকে জানান, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকারও চায় যে স্কুল খুলুক। কিন্তু, এই বিষয় নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চায় না সরকার।
সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এদিন কোর্টকে বলেন, “আমরা স্কুল খোলায় উত্সাহী। আমরা মানছি যে অনলাইনে আর ফিজিক্যালি স্কুলে যাওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত সকলের কথা সরকারের ভাবতে হবে। তবে, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের মধ্যে ৩,৩৯,৯১৯৭ জনকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। গবেষণা বলছে, টিকা গ্রহণের ২-৩ সপ্তাহ পর শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। পাশাপাশি ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ শিশুদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন ও ডেল্টা নিয়েও সতর্ক করেছে। সেই বিষয়টিও রাজ্যকে মাথায় রাখতে হয়।”
এর পরেই হাইকোর্টকে তিনি আরও কয়েকদিন সময় দেওয়ার আবেদন জানান। তিনি আদালতকে আস্বস্ত করেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর, স্বাস্থ্য দফতর এই বিষয়টির ওপর বিবেচনা করে তবেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যদিকে, মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর যুক্তি, স্কুল-কলেজ না খোলায় পড়ুয়ারা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। সেক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি যথাযথ করোনা বিধি মেনেই চালু হোক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শেষ পর্যন্ত দু’ পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে আদালত রাজ্য সরকারকে ২ সপ্তাহের সময় দেয়। পরবর্তী শুনানি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী।
Facebook Comments