‘শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের কর্ণধার’, ‘শিশুদের হাতেই আগামীর পৃথিবীর ভার’ শিশুদের নিয়ে এসব কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। তবে এই কথাগুলো কিন্তু একেবারে মিথ্যে নয়। আর এ কথা ভেবেই একটি দিনকে আন্তর্জাতিক শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয় । যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে পালিত হয়। সেই হিসেবে আজ ভারতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশু দিবস। তবে বাংলাদেশের শিশু দিবস প্রতি বছরের ১ অক্টোবর পালিত হয়।
এছাড়াও শিশুদের জন্য প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে শিশু অধিকার সপ্তাহ,‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’, কন্যা শিশু দিবস এসব পালন করা হয় ।
এ কথা সকলেরই জানা যে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। আর এই শিশুরাই বিশ্বের ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্ব করে । শিশুদের সংরক্ষণ, কল্যাণ ও শিক্ষার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তারপরও ফুলের মতো শিশুরা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , গত কয়েক বছরের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সংখ্যা- ক্ষতিগ্রস্ত সৈনিকদের চেয়েও বেশি। জাতিসংঘের প্রকাশিত এক তথ্য থেকে দেখা গেছে, উন্নয়নমুখী দেশগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার শিশু অনাহারে মারা যাচ্ছে । তাছাড়া এইডস রোগের কারণেও অসংখ্য শিশুর ক্ষতি হচ্ছে । বর্তমানে পৃথিবীর এইডস রোগে আক্রান্ত ৪ কোটি ৩ লাখ লোকের মধ্যে ২৩ লাখ হচ্ছে ১৫ বছরের কম বয়সের শিশু ।
ভালো নেই বাংলাদেশের শিশুরাও। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় বাংলাদেেশে ৪৯ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে। এসব শিশুদের অধিকাংশ রাস্তায় পাথর ভাঙ্গে, গার্মেন্টসে কাজ করে, ঠেলাগাড়ি চালায়, কাগজ কুড়ায়, পার্কে ফুলের মালা বিক্রি করে। এছাড়াও চুরি করছে ও পকেট মারার মত অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
ভারতের শিশুদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। পরিসংখ্যান বলছে ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগই শিশু। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশী শিশু শ্রমিক রয়েছে ভারতে। জাতিসংঘের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশটির ৫০ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার। এছাড়াও ভারতের স্কুলগুলোতে লিঙ্গ বৈষম্য আছে বলেও ঐ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে যা হোক শিশুরাই আমাদের আগামী। ভবিষ্যাতের কর্ণধার। কারণ শিশুদের মাঝেই লুকিয়ে থাকে একটি দেশের সবটুকু সম্ভাবনা। তাই শিশুদরে শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে সবাইকে, বন্ধ করতে হবে শিশু নির্যাতন এবং শিশুশ্রম। তাইলেই তারা উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে উঠতে পারবে।
Facebook Comments