বাঙালির শয়নে-স্বপনে-জাগরণে বাংলা থেকে যাবে আজীবন। তবে যদি প্রশ্ন করা হয়, বাংলা ভাষার বয়স কত? তাহলে বলতে হয় এই ভাষার উত্পত্তি ১৩০০বছর আগে।বিশ্বের পঞ্চম বহুল ব্যবহৃত ভাষা হল বাংলা।বিশ্বজুড়ে ৩০কোটিরও বেশি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। এদের মধ্যে ২৬কোটিরও বেশি বাংলা ভষাভাষির বসবাস বাংলাদেশ ও ভারতে।বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী বাকি ৪ কোটিরও বেশি মানুষ ছড়িয়ে আছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।পৃথিবীতে এমন দেশ পাওয়া যাবে না যেখানে বাংলা ভাষার ব্যবহার করা হয় না!বাংলা ভাষা সম্পর্কে এমনই কিছু অজানা তথ্য রইল আপনাদের জন্য-
👉🏼১) ভাষা হিসাবে বাংলাকে সরকারি স্বীকৃতি
ভারতের ২৩টি সরকারি ভাষার মধ্যে বাংলা একটি। ত্রিপুরা। আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ভাষার মর্যাদা পেয়েছে বাংলা। আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জেও বাংলা ভাষার চল আছে। এছাড়াও আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ ‘সিয়েরা লিওন’ বাংলাকে সাম্মানিক সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া আমাদের পড়শি দেশ বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা।
👉🏼২) বাংলা ব্যকরণ
একমাত্র ভাষা বাংলা যার ব্যকরণে লিঙ্গভেদ নেই। তবে এর ক্রিয়াপদের ব্যবহার খুবই শক্ত। একটু ভুল হলেই বাক্যের অর্থ পালটে গিয়ে যাচ্ছেতাই ব্যপার ঘটে যেতে পারে।
👉🏼৩) বাংলাতেই আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন এবং তার ইতিহাস
বাংলায় কথা বলার অধিকারে, বাংলা ভাষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে বাংলায় শুরু হয় আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার দাবিতে হওয়া মিছিলের ওপর গুলি চালায় পুলিস। তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান ও আসামে। প্রাণ হারান ১৭ যুবক। এই ঘটনাকে সম্মান জানিয়ে ১৯৯৭ সালে ২১ ফ্রেবুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো।
👉🏼৪) ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বাংলায় লেখা
ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন’ রচনা করেছিলেন বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ যিনি একা হাতে বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে দিয়েছেন নিজস্ব গতি। গীতাঞ্জলী লিখে পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার।
উল্লেখ্য ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে জাতীয় ভাষা হিসাবে অস্বীকার করে এবং পাকিস্তানের একমাত্র সরকারি ভাষা হিসেবে উর্দুকে চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও ঢাকার সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে আসে। এই দিনে বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি মিছিল বের হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও কয়েকজন নিহত হন।
Facebook Comments