দাবদহের মধ্যে সব বিভেদ ভুলে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে বের হয় বাংলা নববর্ষের শুভযাত্রা। জাত-পাতের বিভেদ ভুলে জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি হওয়ার উৎসবে মেতেছেন সমগ্র পশ্চিমবঙ্গবাসী। নববর্ষের দিন কলকাতার কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় লেখক, সাহিত্যিক, কবি, প্রকাশকদের নতুন বই প্রকাশের পাশাপাশি চলছে জমজমাট আড্ডা ও খাওয়া-দাওয়া।
এদিকে কলকাতার পার্শ্ববর্তী বেলঘড়িয়ায় ক্লাব সমন্বয় সমিতির পক্ষে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষকে সঙ্গে নিয় নববর্ষের সুসজ্জিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এই শোভাযাত্রায় ঢাকের তালে আদিবাসী নৃত্য ছাড়াও বিভিন্ন সুসজ্জিত ট্যাবলোর পাশাপাশি আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।
বেলঘড়িয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠার সমন্বয় সমিতির সম্পাদক ও কামারহাটি কেন্দ্রের সাবেক বিধায়ক মানষ মুখার্জী জানান, বাংলার সংস্কৃতি ও বাংলার যা কিছু আছে তার শিকড় অনেক গভীরে। কেউ কেউ বাংলার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চাইছে। বাঙালির মধ্যে যে পারস্পরিক মিলনের সম্পর্ক তার মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে।
তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাস থেকে শুরু করে অনেকেই এই বাংলার সংস্কৃতিকে গভীরে নিয়ে গেছেন। সেটাকে কেউ উপড়ে ফেলতে পরবে না। বাংলার মানুষ একে অপরের সঙ্গে মিলে থাকুক। জাত-পাতের বিভেদ ভুলে সম্প্রীতি-সংহতির বাতাবরণে চলতে চাই আমরা।
অপরদিকে অশুভ শক্তির বিনাশ চেয়ে ব্যবসায় উন্নতির আশায় পুজো দিতে ব্যস্ত পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে পুজো দিতে আসা রামকৃষ্ণ বাবু জানান, আমার ২৬ বছরের কারখানা। শুরু থেকেই পহেলা বৈশাখে আমি ব্যবসার উন্নতির জন্য পুজো দেই।
কলকাতার বেহালা থেকে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে পুজো দিতে আসা চয়নিকা সান্যাল বলেন, প্রচণ্ড রোদের তাপ, ভীষণ গরম, এতটাই গরম ভাষায় বোঝাতে পারবো না। তবুও বাংলার নতুন বছরে পুজো দিতে আসা। এই দিনটির জন্য সারা বছর অপেক্ষার থাকে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা। পহেলা বৈশাখ হচ্ছে বাঙালি জাতির সংস্কৃতির উৎসব। পঞ্জিকা মেনে বাংলাদেশের একদিন পরে রাজ্যটিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হলো।
Facebook Comments