তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তপন দত্ত খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজশেখর মন্থার এজলাস এই রায় দান দেন। পাশাপাশি গোটা মামলাটি নিম্ন আদালত অর্থাত্ হাওড়া কোর্ট থেকে সরিয়ে সরাসরি সিবিআই আদালতে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
১১ বছর বাদে স্বামীর খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ পেয়ে খুশি তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত।
মৃত তপন দত্তের কন্যা পূজা দত্ত জানান, দীর্ঘ এগারো বছরের বেশি সময় ধরে তারা বিচারের আশায় লড়াই করছেন। তার বাবার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালায় প্রথমে সিআইডি। প্রথম চার্জ শিটে মন্ত্রী অরুপ রায় সহ শাসক দলের অনেক নেতার নাম থাকলেও কিছুদিন পরে সিআইডি আবার দ্বিতীয় বারের জন্য চার্জ শিট দিলে, এদের নামগুলো বাদ দেওয়া হয়।
তিনি জানান, দীর্ঘ এগারো বছরে অনেক প্রতিকূলতা ও হুমকির সামনে পড়তে হয়েছে তাদের। অনেক সময় বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পেতেন। এদিন সিবিআইয়ের হাতে তাঁর বাবার হত্যার তদন্তভার যাওয়াতে তিনি আশাবাদী, তার বাবার অপরাধীরা শাস্তি পাবে।
মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী দত্ত দাবী করেন, ‘দীর্ঘ দশ বছর ধরে এই মামলা চলছে। সিআইডি এই হত্যার তদন্ত করেছিল। প্রথম চার্জ শিটে মন্ত্রী অরুপ রায়, ডোমজুড় বিধানসভার বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতাদের নাম থাকলেও পরে সিআইডি সাপ্লিমেন্টারি চার্জ শিট দিয়ে এদের নাম বাদ দেয়। এরপরে প্রথমে হাওড়া আদালতে মামলা চলে। সেখানে মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে রায়দান করেন। শুধুমাত্র তদন্ত না হওয়ার কারণে অভিযুক্তদের ছেড়ে দিতে হল।’
তিনি জানান, ‘আবার এই মামলা কলকাতা উচ্চ আদালতে আসে। সেখানে নিম্ন আদালতের রায়কে বাতিল করে পুনরায় মামলার শুনানি শুরু করা হয়। এর মধ্যে প্রতিম দত্তের উপরে প্রাণঘাতী হামলা হয়, তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে কয়েক ঘন্টার জন্য জেলেও রাখা হয়। তবে এত বছর পরে উচ্চ আদালত এই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৬ মে গুলি করে খুন করা হয় হাওড়া জলাভূমি বাঁচাও কমিটির নেতা তপন দত্তকে। সেই ঘটনায় তৃণমূল নেতা কর্মী-সহ ১৩ জনের নাম জড়ায়। তপন দত্ত নিজেও ছিলেন তৃণমূল দলের সক্রিয় কর্মী।
Facebook Comments