নজিরবিহীন নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটও কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থাকে (সিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নির্বাচনী নথি বিকৃত করার কারণে এমন নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী ৮ জুলাই ভোট, তার আগের দিন সিবিআইকে এই তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২১ জুন) এ সংক্রান্ত আদেশে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেছেন, যে অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী। তাই রাজ্যের কাছে এই তদন্তের ভার দেওয়া উচিত হবে না। হাইকোর্টের এমন মন্তব্যের জেরে ফের বড়সড় ধাক্কা খেল মমতার সরকার।
এতদিন কয়লা পাচার, গরু পাচার, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এবার গ্রাম বাংলা নির্বাচন, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন। যা বাংলা কেন, ভারতের নির্বাচনী ইতিহাসেও সম্ভবত নজিরবিহীন।
হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়ার একটি ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। উলুবেড়িয়া-২ ব্লকে কাশ্মীরা বিবি ও ওমজা বিবি নামের দুই সিপিআইএম প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। এই দুই প্রার্থীর অভিযোগ, তারা যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তা বিকৃত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বক্তব্য, ব্লক ডেভলেপমেন্ট অফিস (বিডিও) তাদের অভিযোগ নেয়নি।
এই ঘটনা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তারা। সেই মামলাতেই এদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন আদালত বলেছে, আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সিবিআইকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ঠিক তার আগের দিন তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছেন আদালত।
আদেশে বিচারপতি আরও বলেছেন, রাজ্য পুলিশকে এই তদন্তভার দেওয়া যাবে না। কারণ যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, তিনি রাজ্য সরকারের কর্মচারী। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিবিআইকেই এই ভার দিয়েছেন।
এনিয়ে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, আমরা তো বারেবারে বলছি, রাজ্যের সরকারি কর্মীর একটা বড় অংশ যে কোনো কারণেই হোক তৃণমূলের ক্যাডারের ভূমিকা পালন করছে। আদালতের রায়ে সেটাই স্পষ্ট হয়ে হয়েছে। এবার বুঝুক, কত ধানে, কত চাল!
Facebook Comments