শেষমেষ মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এই ঘোষণা অনুযায়ী আগামী মার্চ মাস থেকেই বর্ধিত হারে ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অতিরিক্ত তিন শতাংশ হারে ডিএ দেবে রাজ্য সরকার। সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি সকল শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী এবং পেনশনভোগীরাও এই সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার রাজ্য বিধানসভায় বাংলার অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বাজেট পেশ করার সময় রাজ্যের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেন। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য স্ট্যাম্প শুল্কে দুই শতাংশ ছাড় এবং চা বাগানের আয়ের ওপর অব্যাহতি বজায় রাখার প্রস্তাব করেন।
বাজেট পেশের সময় পর্যন্ত ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে কোনও ঘোষণা হয়নি। বাজেট বক্তৃতার শেষে অরূপ বিশ্বাসের হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি চিরকুট দেন, যা পরবর্তীতে তিনি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর হাতে তুলে দেন। এর পরেই ডিএ বাড়ানোর ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী।
ঘোষণা করা হয়, তিন শতাংশ হারে ডিএ বাড়ানোর। বলা হয়, ১লা মার্চ থেকে রাজ্য সরকারী কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা বর্ধিত ডিএ পাবেন। উল্লেখ্য, বাজেটের আগে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। সভায় বাজেট অনুমোদন করা হয়। এই বৈঠকে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কথাও জানানো হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অর্থনৈতিক অবহেলা সত্ত্বেও, রাজ্যের প্রতিটি বিভাগের জন্য প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। এটি একটি কর্মসংস্থানমুখী বাজেট। এতে কোটি কোটি যুবদের কর্মসংস্থান হবে। এই বাজেটের উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার এমনিতেই চাপে রয়েছে। নবান্ন এবং নির্বাচন কমিশনকে মঙ্গলবারই সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, বকেয়া ডিএ না পেলে তারা নির্বাচনের কাজে যাবেন না। এর ঠিক পরের তিনি দিয়ে বৃদ্ধির ঘোষণা দিল রাজ্য সরকার, যদিও সরকারি কর্মচারীরা কতটা খুশি এই নিয়ে, সেই শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারি হারে ডিএ-র দাবীতে তারা আন্দোলন করছেন।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবী, ডিএ-র ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন তারা। বকেয়া ডিএ-র দাবীতে শহীদ মিনারে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। এমনকি অনশনের জেরে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন দুজন সরকারি কর্মচারী।
প্রসঙ্গত, ডিএ-র দাবীতে আদালতেও চলছে লড়াই। সুপ্রিম কোর্টে এখনও বিচারাধীন এই মামলা।
অর্থমন্ত্রী তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য 350 কোটি টাকার একটি স্টার্টআপ তহবিল ঘোষণা করেছেন। একই সময়ে, 12,500 কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরির জন্য 3,000 কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য 2024-25 সালের জন্য চা বাগানে কৃষি আয়কর মওকুফ করার কথা বলেছেন। পশ্চিমবঙ্গে স্ট্যাম্প ডিউটিতে প্রদত্ত ছাড়টি 30 সেপ্টেম্বর 2023 পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এমএলএ এলাকা আপগ্রেড প্রকল্পের অধীনে, বার্ষিক তহবিল 60 লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে 70 লক্ষ টাকা করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই তহবিল বিধায়করা স্থানীয় উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার করেন।
Facebook Comments