শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাংলাদেশী সংযোগও সামনে আসছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে জানা গিয়েছে, এই টাকা হাওলার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। বাংলাদেশে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠদের শনাক্ত করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তালিকায় একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত একজন প্রাক্তন সেনাপ্রধানও রয়েছেন। এই ঘটনায় ইডি আধিকারিকদেরও চোখ কপালে এবং দিল্লীর শীর্ষ আধিকারিকদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ কানেকশন প্রথম সামনে আসে, যখন ফ্ল্যাটে পাওয়া নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত একটি সাদা ব্যাগ পাওয়া যায়। এছাড়াও মে টাকা উদ্ধার হয়, তাতে দেখা যায় নোটগুলি ‘সেলো টেপ’ ব্যবহার করে খামে যেভাবে প্যাকেজ করা হয়েছিল, তা সাধারণত হাওলার পাচারের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ইডি সূত্রে খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অর্থের একটি অংশ হাওলার মাধ্যমে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সেই অর্থের একটি অংশ বেনামে বাংলাদেশে জমি ও বাড়ি কেনা হয়েছে বলেও তথ্য পাচ্ছেন তারা। বাকিগুলো তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানো হয়েছে হয়তো। প্রাথমিক তদন্তে এ কাজে কলকাতার দুই ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
ইডি-র দাবী, এই দুটি সংস্থাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে একজন রেডিমেড পোশাকের ব্যবসায়, অন্যজন শিক্ষা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। রেডিমেড পোশাক কোম্পানি দুই দেশেই ব্যবসা করে। এই কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের কাপড় আমদানি করে এবং দেশের বাজারে বিক্রি করে। শিক্ষা ব্যবসার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনিক্যাল কলেজ এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুল খুলতেও আগ্রহী।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক ও একজন প্রতিমন্ত্রীর নামও সামনে আসছে। ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতা নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন। তিনি বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের সাথে “বিশেষ ঘনিষ্ঠতা” তৈরি করে তাকে ব্যবহার করে।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনার দিল্লী সফরের প্রস্তাব করা হয়েছে। তাকে কলকাতায়ও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে বাংলায় এই কেলেঙ্কারির যোগসূত্র থাকায় বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও সজাগ হয়ে উঠেছে।
Facebook Comments