করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর পর শেষকৃত্য করতে প্রথম বাধা দেন নিমতলার বাসিন্দারা। এরপর ধাপার বাসিন্দারা বুধবার বিকেলে সেখানে শেষকৃত্যের কাজে বাধা দেন। এবার বাধা দিলেন আড়িয়াদহের বাসিন্দারা। বুধবার করোনায় মৃত তিনজনের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেখানে। যদিও সেখানে লকডাউন ও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং অমান্য করে বিক্ষোভ চলে রাত থেকেই।
বুধবার সকাল থেকে তিনজনের মৃত্যু হয় করোনার সংক্রমণে। এই তিনজনের দেহই বিশেষভাবে প্যাক করা ব্যাগে রাখা হয়। হু-এর গাইডলাইন অনুযায়ী কেমিক্যাল দিয়ে রাখা হয়। বুধবার বিকেলে বেলঘরিয়ার প্রৌঢ়ের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ধাপায়। বাকিদের দেহও ছিল পরপর। যদিও ইএম বাইপাস থেকে ধাপার দিকে ঢুকতেই পারেনি পুলিশ। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভব দেখাতে থাকেন। তাঁরা বলে মৃতদেহ পোড়ানোর পরে জীবানু ছড়াবে। তাই তারা সেখানে দেহ পোড়াতে দেবেন না।এরপর সিদ্ধান্ত হয় আড়িয়াদহ শ্মশানে দেহ তিনটি দাহ করা হবে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় সেখানে। বুধবার রাত থেকে এলাকা জুড়ে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। কোনওভাবেই পুলিশকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার লকডাউন ও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং-এর কথা বলা হলেও, বুধবার বিকেল থেকে তা অমান্য করেন ধাপার বাসিন্দারা। এরপর তা অমান্য করতে দেখা যায় আড়িয়াদহের বাসিন্দাদেরও। মাঝরাস্তায় ভ্যান, রিক্সা, বেঞ্চ পেতে অবরোধ করেন এলাকার কিশোর থেকে মহিলা সবাই।
২৩ মার্চ সোমবার রাত ১০ টা নাগাদ স্থানীয়রা নিমতলায় দেহ দাহ করতে বাধা দেন। খবর যায় কলকাতা পুলিশের কাছে। পরে তাদের হস্তক্ষেপেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তার আগে মৃতদেহ শ্মশানে নিতে টানাপোড়েন চলে বেশ কিছুক্ষণ। সল্টলেকের কোনও শববাহী গাড়িই দেহ নিয়ে যেতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিধাননগর পুলিশ ও পুরসভার সহযোগিতায় দেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা শ্মশানে। তার আগে দেহ ঠাণ্ডা ঘর থেকে বের করে কেমিক্যাল মাখিয়ে বিশেষ প্যাকেটে ঢোকানো হয়। শববাহী গাড়ির সঙ্গে যান স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তা, চিকিত্সকরাও।
পরেরদিনই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরসভার তরফে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার শহরে করোনায় মৃত্যু হলে নিমতলা কিংবা কেওড়াতলায় নয়, ধাপায় পোড়ানো হবে মৃতের দেহ। অন্যদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে বাগমারী কবরস্থানের একটি নির্দিষ্ট জায়গা এরজন্য আলাদা করে ঘিরে দেওয়া হবে। সেখানেই দেওয়া হবে কবর।
Facebook Comments