চিংড়িঘাটা শান্তিনগরের আর.এ. ব্লক খেলার মাঠে আয়োজন করেছিল “অনুশিখা কাপ” -একটি তিনদিন ব্যাপী সিক্সসাইড নকআউট ফুটবল টুর্ণামেন্টের। গত ফেব্রুয়ারীতেই ঐ অঞ্চলেই সেক্টর 4-গামী দুটি বাসের রেষারেষিতে হারায় দুটি তাজা প্রাণ। বিশ্বজিৎ্ ভুঁইয়া ও সঞ্জয় বনু নামের ঐ দুই যুবকের নামেই উক্ত টুর্ণামেন্টের বিজয়ী ও রানার্স কাপ দুটি নামাঙ্কিত করেছিলো উক্ত কমিটি। তিনদিন ধরে চলা এই টুর্নামেন্ট রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৩২টি টিম অংশ গ্রহণ করেন।
এদের মধ্যে বিশেষ ভাবে পরিলক্ষনীয় প্রায় প্রতিটি দলই মোহনবাগানের এবং কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ছিলেন। শুধু তাইই নয় খেলার উদ্যোক্তা, আয়োজক, দর্শক, খেলোয়ার ও অন্যান্য সবার মধ্যেই একটা বৃহদাংশ মোহন সমর্থকই । শুধু তাইই নয়, অনেকে নিয়মিত ক্লাবের সাথে যুক্তও বটে। স্থানীয় পৌরপিতা প্রবীর সর্দার ও বিধায়ক শ্রী সুজিত বসুর উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তিনদিন ধরে চলা এই টুর্ণামেন্টে উক্ত কমিটির সাথে সমান ভাবে প্রতিটি ম্যাচ পরিচালনা করতে সাহায্য করেন শান্তিনগর শীতলা মা স্পোর্টিং ক্লাব ও গ্যলাক্সি ক্লাব এর মত স্থানীয় ক্লাবগুলিও। প্রেরণা স্পোর্টস ও শান্তনু বেরার সহৃদয় সহযোগিতা অনস্বীকার্য। পিয়ালী গাঙ্গুলী, কৃষ্ণা, দেবাঞ্জনা, অরিজিত জানা, দেশব্রত, পিকলু রায়, প্রদেশ এদের মিলিত সহযোগিতা অতুলনীয়। জমজমাট ময়দানে তিন দিনের কসকো ফুটবল দখলের লড়াই ও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে যে চারটি দল সেমি ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন তারা হলেন একতা সংঘ, উদয়ন সংঘ শান্তিনগর, মুস্তাক কোচিং সেন্টার ও BAFC ভবানীপুর। দুটি সেমি ফাইনালের ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারন করতে টাই-ব্রেকারের স্মরনাপন্ন হতে হয়। টুর্নামেন্টের চুড়ান্ত পর্বে মুস্তাক কোচিং সেন্টার ও একতা সংঘের খেলাও জমজমাট রুদ্ধশ্বাস পর্যায়ে পৌছায়। দ্বিতীয় অর্ধ শেষের মিনিট খানেক আগে অবধিও খেলার ফলাফল গোলশূন্য থাকলেও শেষের দুই মিনিটে বিশ্বজিত, অমর ও মৃন্ময়ের করা গোলে একতা সংঘ টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব জিতে নেন।
সংগীতশিল্পী রেজুল ঘোষ তার গানের মূর্ছনায় ফাইনালের আগে মাঠ মাতিয়ে তোলে। পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে বিশ্বজিৎ ভুঁইয়া ও সঞ্জয় বনুর মা-বাবা উপস্থিত থেকে সজল নয়নে তাদের স্বর্গীয় পুত্রের নামাঙ্কিত ট্রফিগুলি তুলে দেন চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সদের হাতে। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের প্রাক্তন এক্সুকিউটিভ সদস্য ও ফুটবল দলের প্রাক্তন ম্যানেজার শ্রী সঞ্জয় ঘোষ মহাশয়। তার হাত দিয়ে প্রত্যেক ফাইনালিস্টদের পদক ও বিজয়ী দলকে নগদ ৩০০০০/- টাকা ও রানার্স দলকে ২০০০০/- টাকা পুরস্কার স্বরুপ তুলে দেওয়া হয়।
অনুশিখার উদ্যোগে এর আগেও এই সংগঠনটি থ্যালাসেমিয়া পেশেন্টদের ফান্ড সংগ্রহের জন্য সুকান্ত মঞ্চে একটি উদ্যোগ নিয়েছিলো। আমার (মদালসা বোসের) ও মিমো
ও মতে, “এটা কেবলমাত্র সূত্রপাত, আগামীতে আরো অনেক সমাজসেবামূলক উদ্যোগ নেওয়া হবে অনুশিখার পক্ষ থেকে।”
ছবি – নিজস্ব প্রতিবেদক
Facebook Comments