তখন মৃণাল সেন তাঁর তৃতীয় চলচ্চিত্র বাইশে শ্রাবণ এর স্যুটিং করার জন্য খুঁজছিলেন গ্রামের রাজবাড়ি। অবশেষে খুঁজে পেলেন। স্যুটিং করলেন মানকরের ঐতিহ্যবাহী কবিরাজ বাড়িতে। প্রায় একমাসের উপর এই বাড়িতেই রয়ে গেলেন ছবির নায়িকা মাধবী মুখোপাধ্যায়, নায়ক জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায়। ইতিহাস শিক্ষক শুভজিৎ কর চৌধুরী বলেন, বাইশে শ্রাবণ সিনেমা মৃণাল সেনকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিশেষ পরিচিতি করেছিল। তৎকালীন হাঙ্গেরী আন্দোলন এই ছবির মূল উপজীব্য।
কবিরাজ বাড়ির বিশাল অট্টালিকা মানকরের মল্লিকপাড়ায় অতীতের স্মৃতি নিয়ে আজও বিদ্যমান। কবিরাজ বাড়ির প্রবীনতমা সদস্যা দীপালি গুপ্ত বলেন, বৈদ্যবংশের আদি নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশ। বৃত্তি ছিল কবিরাজি চিকিৎসা। কালক্রমে বর্ধমান রাজপরিবারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হয় এবং অল্পদিনেই রাজবৈদ্য হিসাবে গণ্য হন। রামানন্দ গুপ্ত, ভোলানাথ গুপ্ত, বৈদ্যনাথ গুপ্ত প্রমুখ ছিলেন এই বংশের নামকরা চিকিৎসক।
পরিবারের বর্তমান সদস্য সুরজিৎ গুপ্ত বলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পদধূলি ধন্য এই বাড়ি। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁর ভগ্ন স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য কবিরাজ বাড়ির অতিথি ভবনে অবস্থান করেছিলেন এবং এখানে থাকাকালীনই মানকর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার পরিকল্পনা করেন। শোনা যায় রবার্ট ক্লাইভ ‘দানাপানি’র জন্য এখানে আসেন বেশ কয়েকবার। এসেছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
মানকরের বাসিন্দাদের দাবি কবিরাজবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করুক স্থানীয় প্রশাসন।
Photography – Sudeep Pal
Facebook Comments