সিএবির প্রতিবাদে বিক্ষোভে অশান্ত বাংলা। রাস্তায় জ্বলছে বাস, স্টেশনে পুড়ছে ট্রেন। আন্দোলনের নামে রীতিমতো তাণ্ডব চলছে রাজ্যের সর্বত্রই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কী পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন? রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। ১৮ ডিসেম্বর আদালতে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধারকৃষ্ণণ ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সেদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি। নাগরিত্ব আইনের প্রতিবাদে যখন রাজ্য জুড়ে অশান্তি চলছে, তখন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই সংবিধান না মানার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন বিজেপি নেতা সুরজিত্ সাহা। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে সরকারের লোগো লাগিয়ে কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতা করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে যদি নাগরিকত্ব আইনে বিরুদ্ধে সুর না চড়াতেন, তাহলে রাজ্যে এমন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরিই হত না। মামলাকারীর বক্তব্য, গত শুক্রবার থেকে হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, এমনকী কলকাতায়ও অশান্তি চলছে। জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারী, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রেনেও। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া তো দূর, একটি ঘটনায়ও এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করা হয়নি। রাজ্যে আন্দোলনের নামে তাণ্ডব রুখতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সুরজিত্ সাহা। তাঁর আর্জি, অশান্তিতে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রেলকেও।
আজ সকালে মামলাটি গ্রহণ করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধারকৃষ্ণণ ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। দুপুরে শুনানিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, অশান্তি নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলেই আদালতে পেশ করা হবে। শুনানি শেষে ১৮ ডিসেম্বর অর্থাত্ আগামী বুধবারই রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিকে আবার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েও মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। গত শনিবার রাজ্যে হিংসা বন্ধের আবেদন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। বলেন, এভাবে বিশৃঙ্খলা চলতে থাকলে সংখ্যালঘুদের উপর ক্ষুদ্ধ হবে সংখ্যাগুরুরা। মামলাকারীর দাবি, খোদ কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের এই বক্তব্য অশান্তি আরও ইন্ধন জুগিয়েছে।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments