গলসির শিল্যায় দামোদর পার্ক অতি পরিচিত গলসিবাসীদের। প্রতি বৎসর এখানে বনভোজন করতে আসেন হাজার হাজার মানুষ। শিশু উদ্যান,ফুলের বাগান,নিরাপদে বসার জায়গা এক মনোরম পরিবেশ ছিল। বহিরাগত থেকে এবারে সেই চিত্র অনুসরন করে এখানে এসেছিলেন বনভোজন করতে। কিন্তু তারা ভাবতে পারেনি শিশুদের সমস্ত সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গেছে। ১৫ বিঘার এই পার্কে ফুল ও গাছে জল দেওয়ার জন্য মোটরের ব্যাবস্থা ছিল। আকর্ষনীয় পাথরের একটা কুমির ছিল দামোদর নদীর পাড়েই। যা দেখে বাচ্ছা তো দূরের কথা এমনকি যে কেউ আতঙ্কে শিউরে উঠতেন। সেসব নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক গাছ নেই। এমনকি বেড়া দেওয়া তারগুলোও নেই। বর্ধমান থেকে আসা সঞ্জয় ব্যানার্জী জানান, আমরা কচিকাচা বাচ্ছাদের আনন্দ দেওয়ার জন্য এই পার্কে এসেছিলাম। কিন্তু সেই আনন্দ আমাদের মাটি হয়ে গেল। পার্কটিকে নতুন ভাবে রূপদানের কথা ভেবেছিলেন লোয়া-রামগোপালপুরের প্রধান ফজিলা বেগম। অথচ পিকনিকের ভরা মরসুমে এদিন সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্কটি পড়ে আছে সেই তিমিরেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, যদি শীতকালীন এই মরসুমে পার্কটির অবস্থা ভালো হত তবে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। জরাজীর্ণ অবস্থার ফলে শুধুমাত্র হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার ও দল চড়ুইভাতি করছে। স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে পার্কটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়েছিল। খুব তাড়াতাড়ি এনআর জিএসের ৫৫ লাখ টাকা দিয়ে নবরূপে এই দামোদর পার্কটি সাজানো হবে বলে কথা দিয়েছিলেন প্রধান ফজিলা বেগম।। তবে সাজানো না গেলেও গলসী পুলিশ, গলসী ১ বিডিও অফিস থেকে সারাদিন নজরদারী চালানো হচ্ছে, যাতে করে মদ ও জুয়ার আড্ডা না বসে এবং পিকনিক করতে আসা পরিবারগুলির নিরাপত্তা দিতে সজাগ থাকেন প্রশাসন। তাই সর্বদায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে লোয়া-রামগোপালপুর পঞ্চায়েত,গলসি থানা ও গলসি ১ বিডিও পক্ষে পর্যটনদের শতর্ক করা হচ্ছে দামোদর নদীতে কেউ নামবেন না,ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে,কেউ পার্কের ভিতরে অশ্লীলতা করবেন না ও মদ খেয়ে মাতলামি করবেন না ইত্যাদি। সুদূর শক্তিগড় থেকে আসা সুপ্রিয় ব্যানার্জী জানান। এখানে বড় আশা করে পিকনিক করে আনন্দ পাব বলে এসেছিলাম,কিন্তু সে আশা ব্যর্থ হল। কথা দেওয়া প্রধান ফজিলা বেগম যদি এই পার্কের নজর দেন,তাহলে এলাকার মানুষ খুশি হবেন। নচেৎ এখানে আসার লোকসংখ্য আরও কমে যাবে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মত প্রকাশ করেন। বর্তমানে এই পার্ক এখন জঞ্জালে ভর্তি। পরিষ্কার করার কেউ নেই।
ছবিঃ
১)দামোদর পার্কে বসার জায়গা বেহাল ও জঞ্জালে ভর্তি
২)বর্ধমান থেকে আসা কোলে শিশু নিয়েও এসেছেন দামোদর পাকে বনভোজন করতে।
৩)আকর্ষনীয় কুমিরের পাথর এখন নষ্ট
Photography – Sudeep Pal
Facebook Comments