কলকাতা হাইকোর্টে ফের একবার মুখ পুড়ল রাজ্যের! এবার অবশ্য নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও মামলায় নয়, রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের মামলায়। বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালের সিদ্ধান্তই বৈধ। তিনি যে অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন, তাঁদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। উপাচার্যদের বকেয়া বেতনও মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় এই মোট ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এর পরেই শুরু হয় রাজভবন-নবান্ন বিরোধ।
রাজ্যের তরফে জানানো হয়, এই উপাচার্যদের মানে না শিক্ষা দফতর। কারণ রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এই ১১ জন উপাচার্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। একতরফা নিয়োগের অভিযোগ তোলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর ঘোষণা, শিক্ষা দফতর এই উপাচার্যদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না। ওই উপাচার্যরা যাতে পদ প্রত্যাহার করেন, সেই মর্মে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে তাঁদের সসম্মান অনুরোধও জানান ব্রাত্য। তবে তাঁর আবেদনে কান দেননি ১০ জন উপাচার্যই। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে একজন অবশ্য গ্রহণ করেননি নিয়োগপত্র। এর পরেই রাজ্যের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই উপাচার্যরা বেতন পাবেন না।
গত ৫ জুন রাজ্যপালের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মামলা দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সনৎকুমার ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপাল যাঁদের নিয়োগ করেছেন, সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর কোনও পরামর্শ নেওয়া হয়নি। মানা হয়নি আইনও। মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে। বুধবার এই মামলাটি খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য যেভাবে এই আবেদনকে সমর্থন করেছিল, সেই বিষয়টিও ঠিক নয় বলে মন্তব্য আদালতের।
Facebook Comments