কেউ কি ভাবতে পেরেছিলেন যে ‘হাট খোলা দত্ত’ পরিবারের মেয়ে একদিন কলকাতার বুকে খুলে ফেলবেন অত্যাধুনিক বিউটি পার্লার? কিংবা তাঁর নামের কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্র্যান্ড ‘ফ্লোরাজ্’ বিশাল জনপ্রিয়তা অর্জন করবে?
শর্মিলা সিং ফ্লোরার কাছে সবই যেন আজ রূপকথা। ১৯৮৬তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। তবে তাঁর মন পড়েছিল সৌন্দর্যের চর্চায়। শিখ পরিবারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া আর শেহনাজ হোসেনের জীবন কাহিনী রাতারাতি বদলে দিল তাঁর গতিপথ। তিনি উপলব্ধি করেন সৌন্দর্যের চর্চায় রয়েছে তাঁর জীবনের আনন্দ ও পরিপূর্ণতা।
‘উইমেন্স ওয়ার্ল্ড’–এ বিউটি থেরাপি অ্যান্ড হেয়ার ড্রেসিং কোর্সে ভর্তি হন শর্মিলা সিং ফ্লোরা। সঙ্গে দিল্লিতে দুবছর ধরে চলে শেহনাজ হোসেনের থেকে সৌন্দর্য চর্চার ট্রেনিং। ডিপ্লোমা শেষে ইংল্যান্ডের ‘ইন্টারন্যাশানাল ফেরাপি এক্সামিনেশন কাউন্সিল’ অনুমোদিত সংস্থা ‘উইমেন্স ওয়ার্ল্ড’ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
শিক্ষার্জন পর্ব শেষ করে সৌন্দর্য শিল্প চর্চার ক্ষেত্রে বানিজ্যে মন দেন শর্মিলা সিং ফ্লোরা। কলকাতার ১৯২এ শরত বোস রোডে মহিলাদের জন্য তাঁর প্রথম বিউটি পার্লার খোলেন। উচ্চপ্রশংসায় খ্যাতি অর্জন করে পরের ১২ বছরে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর সুনাম। এরপর ২৯ লেক রোডে আরও বড় জায়গা নিয়ে নানা আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন বিউটি থেরাপি পার্লার খোলেন তিনি। শরত বোস রোডে হয় পুরুষদের হার্বাল সালোন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সুবিধা সম্পন্ন দুটি পার্লার চর্ম ও চুলের পরিচর্যায় অনবদ্য হয়ে ওঠে। আয়ুর্বেদ ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে চুল পড়া থেকে স্কিন-পিগমন্টেশনের প্রিতিটি সমস্যার সমাধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় তাঁর পার্লার। প্রত্যেক ক্ষেত্রে চামড়া ও চুলের প্রকৃতি বিচার করে হার্বাল থেরাপির উপর জোর দেন শর্মিলা সিং ফ্লোরা। তাঁর পার্লার হয়ে ওঠে সারাদিনের দৌড়ঝাঁপ শেষে পরিশ্রান্তির আশ্রয়।
সৌন্দর্যের পরিচর্যায় বিশাল খ্যাতি অর্জন করে ফের নতুন দিগন্তের খোঁজে শর্মিলা সিং ফ্লোরা। এবার তিনি মনোনিবেশ করেন সৌন্দর্যের সেবায় নিজের নাম প্রতিষ্ঠায়। কসমেটিক প্রসাধন সামগ্রী তৈরিতে খুলে ফেলেন নিজের ব্র্যান্ড ‘ফ্লোরাজ্’। তাঁর স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও বডি কেয়ারের নানা সামগ্রী রমরমিয়ে সুনাম অর্জন করেছে। এমনকি শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, ‘ফ্লোরাজ্’ ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে। এই দিন তার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়, রচনা, জয়া আহাসান ছিলেন জোজো।
( ছবি- কোয়েল পাল সিনহা)
Facebook Comments