চিরাচরিত প্রথা মেনে হাতুড়ির শব্দে শুরু হলো ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক প্রাঙ্গণে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। বইমেলায় এবারের থিমকান্ট্রি বাংলাদেশ। এই নিয়ে তিনবার কোনো দেশ এই শিরোপা পেল। একইসঙ্গে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কথাসাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশের লেখিকা সেলিনা হোসেন ও বইমেলার কর্তৃপক্ষসহ বিশিষ্টজনেরা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবাংলাকে আলাদা করতে পারি না। শয়নে স্বপনে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি এক। আজ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র, ভাষা নিয়ে তাদের আত্মত্যাগ আর আমাদের সহযোগিতা, ফলে দুই দেশের সম্পর্কের সীমানা জোর করে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা যায় না।
এরপর একটি পঙতি উদ্ধৃত করে মমতা বলেন, সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর, একদিকে রবীন্দ্রনাথ অন্যদিকে নজরুল। তাদের অবদান আমরা ভুলিনি। এই তারকাঁটার সীমারেখায় পশ্চিমবাংলার ঐতিহ্য যেমন বাংলাদেশের ভেতরে আছে, তেমন বাংলাদেশের অনেক নিদর্শন পশ্চিমবাংলা থেকে গেছে। ফলে আমরা একে অপরের থেকে কি করে নিজেদেরকে আলাদা করি? বাংলাদেশ-বাংলা-ভারত আমরা একে অপরের চিরসাথী। এ মৈত্রী চিরকাল অটুট থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কেনো রাষ্ট্রের পক্ষপাতিত্ব করছি না। তবে আমরা যুদ্ধের বিরোধী। আমরা শান্তির পক্ষে। মনে রাখবেন এটা আন্তর্জাতিক বইমেলা তাই কোনো স্টলের সামনে আন্দোলন বিক্ষোভ দেখাতে যাবেন না।
প্রসঙ্গত, এবারের ৪৫তম বইমেলায় থাকছে ভিন্ন স্বাদ। থিম কান্ট্রি ‘বাংলাদেশ’ এর পাশাপাশি বিদেশি প্রকাশকদের স্টলে হাজির আছে ‘পুতিন’-এর রাশিয়া। একই ছাতার তলায় আছে ‘ইউক্রেন’ হামলার নিন্দায় সরব আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জাপানের মতো দেশের প্রকাশকরাও। এবারে মোট ২০টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই মেলা প্রাঙ্গণ এবার থেকে ‘সেন্ট্রাল পার্ক’ এর বদলে বইমেলা প্রাঙ্গণ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এর জন্য কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিমকে মঞ্চ থেকে দায়িত্ব দেন তিনি।
Facebook Comments