কেন্দ্রের শিক্ষানীতির তীব্র বিরোধিতা করছে রাজ্য। মহারাষ্ট্র, কেরল-ও একই সুরে সুর বেঁধেছে। ৩৪ বছর পর জাতীয় শিক্ষানীতিতে বদল আনতে চলেছে কেন্দ্র। ইউজিসি থেকে একাধিক বিজ্ঞপ্তিও এসেছে প্রকাশ্যে। এই নিয়ে বিভিন্ন স্তর থেকে আপত্তি উঠে এসেছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই নিয়ে মন্তব্য করেছেন। একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “কেন্দ্রের ফতোয়া মানা হবে না। রাজ্য দ্রুত নিজস্ব শিক্ষানীতি আনবে।” জানা গেছে, ইতিমধ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব মনীশ জৈন এই কমিটি গঠন করেছে। একাধিক বিশিষ্টজনও রয়েছে এই কমিটিতে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, সুগত বসু, সুরঞ্জন দাস রয়েছেন। একাধিক শিক্ষাবিদ রয়েছেন।
২ মাসের মধ্যে রাজ্য রিপোর্ট তলব করেছে এই কমিটির থেকে। রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি করা হবে রাজ্যের শিক্ষানীতি। এই কমিটি জাতীয় শিক্ষানীতির সমস্ত দিক খতিয়ে দেখবে। ইউজিসি এবং মাইনরিটি এডুকেশনকে সামনে রেখে যে নতুন গাইডলাইন বের করা হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। অন্যান্য রাজ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি সংক্রান্ত নোটিফিকেশন জারির পর কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাও খতিয়ে দেখা হবে। বেশ কিছু নতুন বিষয়ের প্রস্তাবনা করেছে কেন্দ্র। যেখানে দশম শ্রেণিতে বোর্ডের পরীক্ষা তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে স্নাতকোত্তর স্তরে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার কথা। পাশাপাশি রয়েছে ৫ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালুর প্রস্তাবও। এইরকম একাধিক বিষয় জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে কার্যকর করতে চাইছে কেন্দ্র।
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তাঁর নির্দেশ মতো কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত রাজ্যের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে। এই ধরনের ফতোয়া আমরা মানব না। বিশেষজ্ঞদের মতামত জানার পর আমরা রাজ্যের শিক্ষানীতি ঘোষণা করব।” কমিটির সদস্য শিক্ষাবিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি জানান, “আমেরিকাকে অনুসরণ করে শিক্ষানীতি তৈরি করছে কেন্দ্র। আগেও মনে হয়েছে তাই। এই দেশে ওই পদ্ধতি প্রযোজ্য হয় না।” শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার জানান, “কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে হিন্দির প্রচার রয়েছে। রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।”
Facebook Comments