সোমবার রাজ্যের শিলিগুড়িতে আয়োজিত এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে কখনোই এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। রাজ্যে কোনো ভাগাভাগি করতে দেব না। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন; আমরা আপনাদের পাহারাদার।’ এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে আলিপুর দুয়ারের এক জনসভায় উপস্থিত হয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে পর্যায়ক্রমে গোটা দেশে এনআরসি চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘আসামের পর পশ্চিমবঙ্গে, এমনকি পর্যায়ক্রমে গোটা ভারতে এনআরসি করা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতে আসা সকল অবৈধদের তাড়ানো হবে।’
যদিও এর জবাবে বারংবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলে এসেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে কিছুতেই এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।’
তবে রাজ্যের উত্তরবঙ্গের সাধারণ জনতার অধিকাংশের মতই গিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষে। তাছাড়া গোর্খা এবং রাজবংশীরাও এই এনআরসির পক্ষে তাদের মত দিয়েছিল।
এ দিকে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে এনআরসি প্রকাশের পর চিত্রটা অনেকটাই বদলে গেছে। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমের দাবি, আসামে এনআরসি থেকে বাদ পড়া ১৯ লক্ষাধিক বাঙালির অধিকাংশই হিন্দু। তাছাড়া সেই তালিকায় রয়েছে গোর্খা এবং রাজবংশীরাও। মূলত এরপর থেকেই আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিঙের মতো উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে বিষয়টি নিয়ে প্রচারণায় নেমেছে মমতা নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস।
অপর দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘আমরা রাজবংশী লোকদের ভালবাসি। এখন ওদের কাছে গিয়েও মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আমি আপনাদের ভালবাসি তাই বলছি, কারও কথায় ভুল বুঝবেন না; সিদ্ধান্তটা নিতান্তই আপনাদের। আসামে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের ১৩ লাখ বাঙালি, ১ লাখ হিন্দিভাষী ও ১ লাখ পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। যেখানে সেই বাঙালিদের মধ্যে অধিকাংশ রাজবংশীকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’
মমতার ভাষায়, ‘আমি তো ভাবতে পারি না যে, এই বাংলায় কেবল বন্দ্যোপাধ্যায়ই থাকতে পারবে। প্রয়োজন হলে বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকবে না, এখানে শুধু মানুষ থাকবে; আর তা কেবলই আপনারা।’
ছবি সৌজন্যে : AITC
Facebook Comments