ভারত সরকারের প্রকল্প ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান‘-এর প্রচারে পাহাড় সাফাই করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ অভিযাত্রী দলের। সকলের প্রিয় হিমালয়ের বেহাল দশা দেখে কার্যত হতাশ হয়েই ফিরলেন ১১ জনের অভিযাত্রী দল৷ বিশ্বের গর্ব হিমালয়ের এই অংশে কঙ্কালসার রূপ বেরিয়ে এসেছে এই দলের সামনে৷ শৈলচূড়া সান্দাকফুতে সাফাই অভিযানে গিয়ে বস্তা বস্তা মদের বোতল সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পাহাড়ের বুকে যে এত আবর্জনা জমে থাকতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা৷ পাহাড়ের এই জীর্ণ রূপ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা৷ পরিবেশবিদরা বলছেন, এর গভীর প্রভাব পড়তে পারে বাস্তুতন্ত্রে।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা ওএনজিসির সহায়তায় স্বচ্ছ ভারত অভিযানের প্রচারে পাহাড়ে গিয়েছিল ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন সংগঠনের একটি দল৷ ‘স্বচ্ছ হিমালয় অভিযান’ নামের সেই অভিযানে ১১ জনের দলে নেতৃত্বে ছিলেন এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী দেবরাজ দত্ত৷ গত ৫ নভেম্বর ৫ দিনের জন্য পাহাড়ে গিয়েছিলেন তাঁরা৷ চিত্রে, গৌরীবাস, সান্দাকফু, সবরগ্রাম, মোলে, ফালুট সহ মোট ১৪টি জায়গায় মোট ৫৪ কিমি এলাকার এই অভিযান চালানো হয়। সেখানে থেকে সংগ্রহ করেন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ৷ জানা গেছে, পাহাড় থেকে মোট ২৪৮ বস্তা বর্জ্য পদার্থ উদ্ধার করেছে দলটি৷ যার মোট ওজন হয়েছে ৩২২৫ কিলোগ্রাম৷ শুধুমাত্র সান্দাকফু থেকেই ৫২ বস্তা বর্জ্য উদ্ধার হয়েছে। জঞ্জালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উদ্ধার হয়েছে খালি মদের বোতল, প্লাস্টিকের জলের বোতল ও গুটখার প্যাকেট৷ এইসব বর্জ্য পাহাড় থেকে নামিয়ে মানেভঞ্জন নিয়ে আসা হয়। এরপর ৪টি ট্রাকের সাহায্যে শিলিগুড়ি নামিয়ে সেগুলি বিনষ্ট করার জন্য শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যালিটির ভ্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়।
সান্দাকফুর মতো একটি মনোরম পর্যটনস্থলের এমন বেহাল অবস্থা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিযাত্রী দলটি৷ এই বিষয়ে গভীর আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন দলের নেতৃত্বে থাকা দেবরাজ দত্ত৷ এই ভাবে চলতে থাকলে একদিন পাহাড়ের ইকো সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে বলে জানান তিনি৷ একইসঙ্গে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হওয়া সত্বেও পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে শৌচালয় না থাকারও নিন্দা করেন তাঁরা৷ পাহাড়ের পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য পাহাড়ের দায়িত্বে থাকা জিটিএ-কে অনুরোধও করেন।
ছবি সৌজন্যেঃ মিলেনিয়াম পোস্ট
Facebook Comments