সবকিছু ঠিক থাকলে আজ থেকেই কলকাতার বাজারে পাওয়া যেতে পারে পদ্মার রুপালি ইলিশ। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরেই বাংলাদেশের সীমান্ত হয়ে ভারতের কলকাতায় ঢোকার কথা ছিল ইলিশ। কিন্তু কাগজপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে ওইদিন পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে পারেনি বলে জানা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আটটি লরির মধ্যে দু’টি লরি এসে পৌঁছেছে বেনাপোলে। বাকি ছয়টি লরি এলেই সীমান্ত পেরোনোর অনুমোদন মিলবে। মোট ৫০০ মেট্রিক টনের মধ্যে আটটি লরিতে প্রথম ভাগে রাজ্যে আসবে ৩০.৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ। কলকাতায় এখন পুজোর মৌসুম। পুরো অক্টোবর জুড়ে পরপর পুজো। আর এ উৎসবের মৌসুমে রাজ্যবাসীর বাড়তি পাওনা বাংলাদেশের উপহার পদ্মার ‘রুপালি ফসল’। প্রায় সাত বছর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে পশ্চিমবাংলার বাজারে সোমবার থেকেই সম্ভবত বাজার আলোকিত করবে বাংলাদেশি ইলিশ। পাইকারি বাজারে এমন খবরই পাওয়া যাচ্ছে।
হাওড়া ফিস মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক এবং ফিস ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানান, সোমবার বিকেল থেকেই পাইকারি বাজারে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যেতে পারে। মঙ্গলবার থেকে পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়বে কলকাতার খুচরা বাজারে। বাংলাদেশি ইলিশ যশোর রোড ধরে বনগাঁ হয়ে ছড়িয়ে পড়বে কলকাতা ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে। কিছু যাবে পশ্চিমবঙ্গের অন্য জেলাগুলোতে।
তিস্তার পানি বিতর্কে ২০১২ সাল থেকে ভারতে ইলিশ আসা বন্ধ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। ইলিশ নিয়ে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোমোহন সিং থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে। কিন্তু ইলিশ না পাঠানো নিয়ে অনড় থেকেছে বাংলাদেশ। এরপর মোদী সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় এলে, শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। তখন কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্বল্প বৈঠকে হাসিনা জানিয়ে দেন, ‘পানি গেলে ইলিশ আসবে।’
তবে এবার হঠাৎ করে কলকাতাবাসীদের জন্য পূজার উপহার পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ।
শুল্ক দপ্তরের ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠন সূত্রে জানা যায়, কাগজ সমস্যা মিটলে সোমবার ইলিশ ঢুকবে ভারতে। ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ ঢুকবে। তা সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই ফের বন্ধ হয়ে যাবে ইলিশ আসা।
পাইকারি বাজার সূত্রে জানা যায়, খুচরো বাজারে বাংলাদেশি ছোট ইলিশের দাম হতে পারে কেজি প্রতি ৭ থেকে ৮ শত রুপি। মাঝারি ইলিশের দাম ১৬ থেকে ১৭ শত রুপি। বড় সাইজের ইলিশ দুই হাজার রুপি ছাড়াবে। অর্থাৎ সাইজ যত বড় হবে, ততই দাম বাড়বে।
পূজার মৌসুমে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশের অনুমোদনে কলকাতার মৎস্য ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি চওড়া হয়েছে। খুশি দুই দেশের আমদানি ও রপ্তানিতে যুক্ত থাকা ব্যবসায়ীরাও। কলকাতার মৎস্য ব্যবসায়ীদের মতে পূজার মৌসুমে এ আমদানি চলতে থাকুক। আবার বন্ধ হয়ে গেলে মাছে-ভাত বাঙালির ফের মন খারাপের পারদ চড়বে।
ছবি সংগৃহিত
Facebook Comments